রাজনীতিতে তারকাখচিত ব্যক্তিদের নির্বাচনে প্রার্থী করার ট্রেন্ড ছিল দক্ষিণ ভারতে। কিন্তু বিগত বাম সরকারকে হটিয়ে পশ্চিমবঙ্গেও দক্ষিণী হাওয়া নিয়ে আসেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানর্জি। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন ২০০৯ সালে তিন সেলিব্রেটিকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা।
গত ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সেই সংখ্যাটা প্রায় দ্বিগুন হয়ে যায়।
রাজনীতির সাথে যুক্ত নয় এমন ১০ জনকে প্রার্থী করেন মমতা। এবারেও তার ব্যতিক্রম হল না। ক্রীড়াজগত, সংস্কৃতিজগত, শিক্ষাজগত থেকে একাধিক ব্যক্তিকে প্রার্থী করেছেন তিনি।
আসানসোলে প্রার্থী হয়েছেন অভিনেত্রী মুনমুন সেন, টালিগঞ্জের অভিনেতা দেব (দীপক অধিকারী)-কে প্রার্থী করা হয়েছে ঘাটাল কেন্দ্র থেকে, বালুরঘাট থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন বিশিষ্ট নাট্যপরিচালক অর্পিতা ঘোষ, বীরভূম থেকে অভিনেত্রী শতাব্দী রায়কে। তবে সবথেকে বড় চমক অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ও নুসরাত জাহানকে প্রার্থী করা। যাদবপুর থেকে মিমি চক্রবর্তী এবং বসিরহাট কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে অভিনেত্রী নুসরাত জাহানকে।
অন্যদের মধ্যে মমতার ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জি লড়বেন ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্র থেকে, বারাসাত থেকে কাকলি ঘোষ দস্তিদার, দমদম থেকে সৌগত রায়, উত্তর কলকাতা থেকে সুদীপ বন্দোপাধ্যায়, দক্ষিণ কলকাতা থেকে মালা রায়, পাশাপাশি সুব্রত মুখার্জিকে প্রার্থী করা হয়েছে বাঁকুড়া থেকে।
তবে আশ্চর্যজনক ভাবে এবারের নির্বাচনে ১০ জন বর্তমান সাংসদকে টিকিট দেওয়া হয় নি। সাংসদ ও অভিনেতা তাপস পালের পরিবর্তে কৃষ্ণনগর থেকে প্রার্থী করা হয়েছে মহুয়া মৈত্রকে। মেদিনীপুরে সন্ধ্যা রায়ের জায়গায় প্রার্থী হয়েছে মানস ভুঁইয়া। তেমনি দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সদস্য নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্য এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত বসুকে সরিয়ে দিয়ে তার জায়গায় আনা হয়েছে মিমিকে।
এছাড়াও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি সুব্রত বক্সী, উমা সোরেন, ইদ্রিশ আলি সহ আরও কয়েকজনকেও প্রার্থী করা হয়নি। যদিও এদেরকে প্রার্থী না করা হলেও দলের সাংগঠনিক কাজে লাগানো হবে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তৃণমূলের ১২ সদস্যের নির্বাচনী কমিটির সাথে বৈঠকে বসেন দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। ওই কমিটিকেই লোকসভা ভোটের প্রার্থীদের বিষয়গুলি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কমিটির সাথে বৈঠকেই প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর বিকালে রাজ্যের ৪২ টি কেন্দ্রেই প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়।
আসলে মমতা চেয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা যাতে সময় নষ্ট না করে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েন। সম্প্রতি মমতা নিজেও জানিয়েছিলেন যে কয়েকটি আসনে প্রার্থী বদল হতে পারে। এদিনের তালিকা প্রকাশের পর সেই ছবিটাই দেখা গেল। এদিন, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ওড়িষ্যা, আসাম, ঝাড়খন্ড, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকেও তার দল লড়াই করবে বলে ঘোষনা দেন মমতা।