ঢাকা: সিইসির বক্তব্যই প্রমাণ করে ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে তার নির্দেশেই ব্যালট বাক্স ভরা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, প্যান্ডোরার বাক্স থেকে এখন আসল ঘটনাগুলো বের হতে শুরু করেছে। থলের বিড়ালকে আর বেশিদিন আটকে রাখতে পারলেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। আসলে সত্যকে ঢেকে রাখলেও তাতে লাভ হয় না। সত্য কুহেলিকার আচ্ছাদন ভেদ করে বের হবেই। মিডনাইট নির্বাচনে আসল সত্যটি এখন সিইসি মুখ ফসকেই বলে ফেলেছেন। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া দস্যুতারই নামান্তর।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সেই দস্যুতারই আচরণ করেছেন সিইসি। ইভিএম চালু হলে নাকি ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির ঝুঁকি কমবে-এমন কথা বলেছেন সিইসি। জনগণের হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কমিশনে ইভিএম মেশিন প্রকল্প অপরিহার্যতা প্রতিপাদন করার জন্যই কি সিইসি ২৯শে ডিসেম্বর রাতে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন? একটি প্রকল্পের যথার্থতা প্রমানের জন্যই আপনি কি সারাদেশের ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নিলেন ?
তিনি বলেন, আপনার ব্রেইন চাইল্ড প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের আমানতকে আপনি কেড়ে নিলেন। আজ আপনার এবং আপনার সহচরদের মুখ দিয়েই আসল সত্যটি প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। অথচ আপনি ৩০শে ডিসেম্বরের রাত থেকেই সুষ্ঠু নির্বাচনের ঝুড়ি ঝুড়ি গালগল্প শুনিয়েছেন মানুষকে। মিডনাইট নির্বাচনের হোতা আপনি।
আদর্শগত শুন্যতার কারণে আপনি এতবড় অন্যায়টি করেছেন জনগণের বিরুদ্ধে। এটি অবৈধ সরকারের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতি বাস্তবায়ন করতেই আপনি মহাভোট কেলেঙ্কারির মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করলেন। আপনার এই বক্তব্যটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে থাকলো জাতির কাছে। আপনি ২৯শে ডিসেম্বর রাতে স্বচ্ছ জালিয়াতি ও মহাকারচুপির ভোট সেরে ফেলেছেন। তবে মনে রাখবেন-পাপ কখনও বাপকেও ছাড়ে না। আমজনতার কাছে আপনাকে জবাবদিহি করতেই হবে।
রিজভী বলেন, দেশ এক ব্যতিক্রমী দু:শাসনের মধ্যে নিপতিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধ্বজাধারীরা মুক্তিযুদ্ধের বীর সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মীনি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারের আলোবাতাসহীন অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দী করে রেখেছে।
আর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে জাতীয় সংসদে অনুগত বিরোধী দলীয় নেতা বানানো হয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রীকে রাখা হয়েছে পরিত্যক্ত কারাগারের স্যাঁতসেতে কারা প্রকোষ্ঠে। আর মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার রিক্রুটমেন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত ডিসি-কে করা হয়েছে নানাভাবে পুরস্কৃত। তাকে কখনও মন্ত্রী বা কখনও এমপি বানানো হয়েছে। রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের স্ত্রীকে প্রতিহিংসাবশত: সাজা দেয়ার জন্যই মিথ্যা মামলা বানিয়ে এখন কারাগারে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সুকমল বড়ুয়া, সৈয়দ মো. শামসুল আলম, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করিম শাহীন, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।