ঢাকা: রাজধানীর সদরঘাটে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবির ঘটনায় এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে ডুবুরিরা। তার নাম মাহির (৮)। বাকি চারজনের খোঁজে আজ শনিবার তৃতীয় দিনের মতো নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ পুলিশ।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নৌকাটি ডুবে গেলে ছয়জন নিখোঁজ হন।
শুক্রবার এক জামসেদা এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল ৮টার দিকে আহসান মঞ্জিল জাদুঘর বরাবর নদী থেকে মাহির (৮) নামে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। সে আহত পোশাক শ্রমিক শাহজালালের মেয়ে মাহির।
চাচাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নিজের ও বোনের পরিবারকে নিয়ে শরীয়তপুর যেতে বৃহস্পতিবার কামরাঙ্গীরচর থেকে নৌকায় করে সদরঘাট এসেছিলেন শাহজালাল। পেছন থেকে লঞ্চে ওঠার সময় ঢেউয়ের তোড়ে নৌকাটি উল্টে গেলে ডুবে যান ছয়জন।
পরিবারের নিখোঁজ অন্য সদস্যরা হচ্ছেন- পোশাক শ্রমিক শাহজালালের স্ত্রী সাহিদা বেগম (৩২), দুই মেয়ে মিম (৮) ও জামসেদার স্বামী দেলোয়ার হোসেন (২৮) ও তাদের সাত মাস বয়সী সন্তান জুনায়েদ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বরিশালগামী সুরভি-৭ লঞ্চটি সদরঘাট থেকেই দ্রুত গতিতে চলছিল। এর মধ্যেই সদরঘাটগামী ওই নৌকাকে ধাক্কা দেয় লঞ্চটি।
মুহূর্তের মধ্যেই নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিলেন শাহজালাল ও তার পরিবারের সদস্যরা। বুড়িগঙ্গা নদীর মধ্যখানে এ ঘটনা ঘটায় এই চিৎকার শুনেছেন কম মানুষই। তবে দূর থেকে এই দৃশ্য দেখে এগিয়ে যায় নৌ-পুলিশের একটি টিম। তারা দ্রুত গিয়ে শাহজালালকে উদ্ধার করেন।
ততক্ষণে লঞ্চের পাখার আঘাতে শাহজালালের দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নৌ-পুলিশের সদস্যরা শাহজালালকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই সময়ে নৌকার মাঝি সাঁতরে পাড়ে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু নৌকায় থাকা শাহজালাল ছাড়া ওই পরিবারের অন্য সদস্যদের জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নৌ-পুলিশের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল জামসেদার লাশ উদ্ধার করে। নিখোঁজদের উদ্ধার করতে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকেই তিনটি ইউনিট, ছয়টি স্পিটবোড, পাঁচটি অগ্নিশাসকসহ প্রায় ২৭ জন ডুবুরি কাজ করে যাচ্ছে।