পঞ্চগড়: বিএনপি-জামায়াত ধর্মের কথা বলে নারীদের ঘরের কোণে আটকে রাখার চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন রেলপথমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন। হিজাব ও বোরকার সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, হিজাবের নামে নারীরা নিজেরাই নিজেদের বন্দি করে ফেলছে। এটির মধ্যেও সুক্ষ্ম ধর্মীয় প্রচারণা রয়েছে। এটি এখন বাংলাদেশের প্রত্যেক জায়গায় শুরু হয়েছে। জামায়াতের একদল আছে যাদের চোখ ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। এসবের সাথে ধর্মের বড় ধরনের সম্পর্ক আছে বলে আমি করছি না। বোরকা পরে অনেক নারী ক্রাইম করছে।
শুক্রবার দুপুরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পঞ্চগড় সরকারি মিলনায়ত চত্বরে জেলা প্রশাসন ও মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর আয়োজিত এক আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি কোটা আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণের সমালোচনা করে বলেন, কোটা আন্দোলনে নারীদেরই ক্ষতি হয়েছে। নারীরা বলতে পারত তাদের কোটা রাখতে হবে। কিন্তু তারাই আন্দোলনে নেমেছে। তাই কোটা বাদ দেওয়া হয়েছে।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, নারীরাই নারীদের দ্বারা বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাই নারীদের নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য নিজেদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। সেই সাথে নারীদের সুশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। নারীদের মধ্যে যতই শিক্ষার আলো প্রবেশ করবে ততই তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে বৈরী পরিবেশের মধ্যেই কার্যকর অনেকগুলো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। স্থানীয় সরকার থেকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেছেন। পুলিশ, প্রশাসন, বিজিবি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীতে নারীরা পুরুষের সমান অবদান রাখছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
নারী-পুরুষ বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে তিনি সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, পুলিশ সুপার গিয়াসউদ্দিন আহমদ, পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ কানাই লাল কুন্ডু, সিভিল সার্জন ডা. নিজামউদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আব্বাস আলী, জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান রেজিয়া ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হোসেনে আরা বেগম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক সহকারী কমান্ডার আলাউদ্দিন প্রধান বক্তব্য রাখেন।
জেলা পরিষদ সদস্য আকতারম্নন নাহার সাকীর সঞ্চালনায় জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রুখশানা মমতাজ স্বাগত বক্তব্য দেন। এর আগে মন্ত্রী রঙিন বেলুন উড়িয়ে নারী উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেন। নারীদের তৈরি বিভিন্ন জিনিস ও হস্তশিল্প নিয়ে মেলায় ১০টি স্টলে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।