ঢাকা: বহু নাটকীয়তার পর সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন একাদশ সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম থেকে বিজয়ী দুই নেতা। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ শপথ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আজ শনিবার বিকেলে চিঠি দেন তাঁরা দুজন। তবে তাঁদের চিঠির বিষয়ে কিছুই জানেন না গণফোরাম ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা।
চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান। গত নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়ী হন সুলতান মনসুর। আর সিলেট-২ আসন থেকে উদীয়মান সূর্য প্রতীকে জয়ী হন মোকাব্বির। শুরু থেকেই তাঁরা দুজন শপথ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু দল ও জোটের চাপে এটি পিছিয়ে যায়।
এর আগে একাধিকবার শপথ না নেওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন গণফোরামের সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃ নির্বাচনের দাবি করে ঐক্যফ্রন্ট। তাই জোট থেকে নির্বাচিত আটজনের কারও শপথ না নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নির্বাচন সামনে রেখে গত বছরের অক্টোবরে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য মিলে রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। পরে এতে যোগ দেয় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। নির্বাচনে গণফোরামের দুজন ও বিএনপির ছয়জন জয়ী হন।
এ প্রসঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা গত নির্বাচনের আগে ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি জোটের শীর্ষ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য হন। নির্বাচনের আগে তিনি গণফোরামের প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহণ করে দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন পান। নির্বাচনের পর থেকেই শপথ নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন তিনি। এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেওয়ায় নির্বাচনের পর থেকে ঐক্যফ্রন্টের কোনো বৈঠকে অংশ নেননি এই নেতা। শপথের বিষয়ে জানতে চাইলে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তাঁর নির্বাচনী এলাকার দলমত–নির্বিশেষে শতভাগ জনগণ শপথের পক্ষে আছেন। তাই অন্য কে কী বলল, তাতে কিছু যায়–আসে না। দলের সিদ্ধান্ত না থাকলেও শপথ নেওয়া নিয়ে কোনো জটিলতা তৈরি হবে না বলেও মনে করেন তিনি।
প্রাথমিকভাবে জোটের মনোনয়ন না পেলেও শেষ মুহূর্তে সিলেট-২ আসনে বিএনপির প্রার্থিতা বাতিল হলে সমর্থন পান মোকাব্বির। গণফোরামের প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। প্রাথমিকভাবে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে অপেক্ষা করলেও তা থেকে সরে এসেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতা শপথের পক্ষে। দুই থেকে তিনজন এর বিরোধিতা করেছেন। স্পিকারের সময় পাওয়া গেলে ঐতিহাসিক ৭ মার্চে শপথ নেওয়ার আগ্রহ তাঁর। তাই দলের সমর্থন তাঁর পক্ষে থাকবে বলে মনে করেন তিনি।