ঢাকা:৩০ শে ডিসেম্বরের তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটা যে বেদখল হয়ে গেছে সেটাকে দখলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে আজ জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল-জাসদ এর আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই দেশটা আমাদের সকলের দখলে ছিল। সেটা এখন বেদখল হয়ে গেছে। আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের যে দেশটা বেদখল হয়েছে এটা দখলে নেব। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নেব। সংবিধানের মধ্যে থেকে শাসন করব। যে ঐক্যের ভিত্তিতে দেশটা স্বাধীন হয়েছিল সেই ঐক্যের ভিত্তিতে দেশ শাসন করব।
ড. কামাল হোসেন বলেন, বাংলার মাটি কোনদিন কোন স্বৈরাচারীকে মেনে নেয়নি। এখনো নেয়না। এ দেশের স্বাধীনতা এমনি আসেনি। যারা মানুষকে বঞ্চিত করে রাখতে চায়। তারা আমরা যারা বেঁচে আছি তাদের ঘোল খাওয়াতে পারে না। আজ এখানে তরুণ-প্রবীণ যারা এসেছেন, তারা আপনাদের বাড়িতে গিয়ে বলেন, আমরা সবাই গিয়ে এক জায়গায় বসি। আমরা সকলে মালিক হিসেবে পাড়াই পাড়াই, মহল্লায় মহল্লায়, জেলায় জেলায় গিয়ে বলি জনগণ দেশের মালিক।
তিনি বলেন, জেলে আর জায়গা নেই। এটা একটা সুখবর। পত্রিকায় খবর এসেছে জেলে আর জায়গা নেই। এখন প্রস্তাব এসেছে নতুন করে জেল বানাতে হবে। কিন্তু একটা জেল বানাতেও তো ২/৩ বছর সময় লাগে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ৩০ তারিখে যে তথাকথিত একটা নির্বাচন হয়ে গেল। কেউ কি এটাকে গুরুত্ব দিয়েছেন? যারা বলে এটা একটা নির্বাচন হয়েছে। আমি বলব আল্লাহ তাদের সুস্থতা দাও। তারা অসুস্থ। তারা সুস্থ হতে পারে না।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ২৯ ও ৩০ শে ডিসেম্বর সরকার জনগণকে অপমান করেছে। আর গতকাল জনগণ সরকারের গালে থাপ্পড় মেরেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন আর রাষ্ট্র নয়। ২৯ তারিখে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটা নিহত হয়েছে। ২৯ ও ৩০ তারিখে প্রশাসন, ইউনিফরম পরিহিত বাহিনী ভোট চুরির মাধ্যমে রাষ্ট্রকে বিলীন করে দিয়েছে। এটা আর এখন রাষ্ট্র নেই।
রব বলেন, আওয়ামী লীগ একটি স্বৈরাচারের দল। কোন স্বৈরাচার সরকার থাপ্পড়ে বিদায় হয় না। তাদেরকে বিদায় করাতে হবে।
তিনি বলেন, এই সরকার আপশে বিদায় হবে না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও এই সরকার বিদায় হবে কি না আমি জানিনা। তবে তাদেরকে আমাদের বিদায় করাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রব বলেন, মিথ্যা কথা বলে হাসির জন্য নোবেল প্রাইজ কে পাবে? মোনালিসা পাবে? না। মিথ্যা কথা বলে হাসি দেয়ার জন্য নোবেল দেয়া হলে বাংলাদেশের একজন এই পুরষ্কার পাবে।
তিনি বলেন, অসুস্থ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি। অসুস্থ খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রাখা হয়েছে। একের পর এক তার নামে মামলা দেয়া হচ্ছে। তার জামিন বিলম্ব করা হচ্ছে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সমস্ত পত্রিকায় দেখেছি ভোট কেন্দ্র শূন্য ছিল। মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে তোমরা ভোট চোর। এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ মেধাশূন্য, কর্মী শূন্য ও মানুষের ভালোবাসা শূন্য। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে আমারা পরাজিত কারণ আমাদের বোঝার কিছু ভুল ছিল। আমাদের ধারণা ছিল না আওয়ামী লীগের মতো একটা দলের নীতিহীনতা এতো নিচে নামতে পারে। আমরা সেটা বুঝতে পারিনি।
জেএসডি নিনিয়র সহ সভাপতি এম এ গোফরানের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু প্রমুখ।