মাসুদ পারভেজ কাপাসিয়া (প্রতিনিধি): গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গত শুক্রবার রাতে এক কন্যা সন্তানের জননী অন্তসত্ত্বা গৃহবধূ শারমিন আক্তার (২৫) কে স্বামী- এমরান হোসেন (৩০), শাশুড়ি-জামিলা বেগম (৪৫) ও শ্বশুর-চান মিয়া (৫৫) যৌতুক না দেয়া এবং কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার দায়ে পিটিয়ে আহত করে শ্বাস রোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানা পুলিশ শনিবার সকালে নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে অভিযুক্তরা।
নিহত শারমিন কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের দেওতলা গ্রামের লোকমান ফকিরের কন্যা। তার ১৩ মাস বয়সের ইসরাত নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গৃহবধূর মাতা তাসলিমা আক্তার জানায়, ২০১৫ সালে কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের কোট বাজালিয়া গ্রামের চান মিয়ার পত্র ইমরানের সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে মেয়ের উপর অমানষিক নির্যাতন শুরু করে এ নিয়ে অনেক দেন দরবার হয়েছে। আমরা বেশ কিছু টাকা তাকে দিয়েছি তাতেও তার ওপর নির্যাতন থামেনি, তারপর মেয়ের গত ১৩ মাস পূর্বে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়, এরপর আরো নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় মেয়েকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি। গাজীপুর কোর্টে যৌতুক ও নারী শিশু আইনে একটি মামলা করি। গত ৩ মাস আগে তার স্বামী তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যায়। গতকাল ভোরে এলাকার চৌকিদার আমাদেরকে জানায় তার স্বামীর বাড়িতে তার মৃতদেহ পরে আছে। খবর পেয়ে আমি ও আমার মেয়ে লাভলি ছুটে যাই এবং আমার মেয়ের লাশ মাটিতে পরে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেই। তখন বাড়িতে তার স্বামী, শশুর শাশুড়ি কাওকে পাইনি। আমি আমার মেয়ের হত্যার সষ্ঠু বিচার দাবি করি।
বোন লাভলি আক্তার জানায়, আমার বোন অন্তসত্বা ছিল, মেয়ে হবে এ ধারণায় তার স্বামী সন্তান নষ্ট করার জন্য তাকে টেবলেট খাইয়েছিল। সে মাঝে মধ্যেই ফোনে নির্যাতনের কথা জানাত, আমি তাকে চলে আসতে বললে তাকে আসতেও দিতনা। আমি আমার বোনের মৃতদেহের গলায় ও ডান হাতে রক্তাক্ত দাগ চিহ্ন দেখেছি।
কাপাসিয়া থানার ওসি (অপারেশন) মনিরুজ্জামান খান জানান, সংবাদ পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এলাকাবাসী আমাদেরকে ঝুলন্ত লাশের খবর দিয়েছে তবে আমরা লাশ মাটিতে পেয়েছি। আমরা এখনও অভিযোগ পাইনি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।