ঢাকা: যে পরিবারটিতে আসছে নতুন অতিথি, সে পরিবারটি আজ পুড়ে কয়লা। গতকাল দিবাগত রাতে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে ৮১টি পোড়া দেহ।
এদের বেশিরভাগের চেহারা দেখে চেনার উপায় নেই। এই লাশের মিছিলেই আছেন রিফাত এবং তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রিয়া। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এ দম্পতির স্বজনরা। তারা মরদেহ শনাক্ত করতে পারছিলেন না। কিন্তু জানালেন এক মর্মস্পর্শী কাহিনি।
দত্ত রোডের ‘ওয়াহিদ ম্যানশন’ ভবনে রিয়া-রিফাতের বাস। ভবনটির তৃতীয় তলায় থাকতেন তারা।
রিয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আগুন লাগার পর তাদের হয়তো নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু রিয়া বেশ অসুস্থ। দৌড়ঝাঁপ করে দ্রুত সরে যাওয়ার অবস্থায় ছিলেন না তিনি। কিন্তু স্বামী রিফাত নিজেকে বাঁচাতে পারতেন। কিন্তু প্রিয়তমা স্ত্রী আর তার গর্ভে থাকা সন্তানকে রেখে কীভাবে পালাবেন তিনি! আগুনের লেলিহার শিখার দিকে হয়তো বুক পেতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। যদি ওই বুকে আগুন থেমে যায়! যদি তার স্ত্রী আর অনাগত সন্তান বেঁচে যায়! কিন্তু নিয়তি তিনজনকেই পুড়িয়ে দিলো। স্ত্রীর সঙ্গে মৃত্যুকে বরণ করে নিলেন রিফাত।
স্বজনরা জানালেন, আগুন লাগার পর রিফাতের পরিবারের সঙ্গে তাদের একজনের কথা হয়েছিল। রিফাত জানিয়েছিলেন যে রিয়াকে নিয়ে নামা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সে নিজেও নামবে না। পরে দুজনই দগ্ধ হন তারা।