রাতুল মন্ডল, শ্রীপুর: গাজীপুর জেলার একেবারে উত্তর সীমান্তে অবস্থিত উপজেলার নাম শ্রীপুর। আর এই উপজেলার সবচেয়ে উত্তরে অবহেলিত ইউনিয়নের নাম কাওরাইদ। আর এই সবুজ শ্যামল জনপদের সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত রফিকুল ইসলাম মন্ডল। হঠাৎ করে তিনি হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর এই ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের ভাগ্য আকাশে জ্বলছে অন্ধকার প্রদীপ। এই শূন্য স্থান পূরণ করতে দীর্ঘ সময় ধরে একেবারে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সাথে কাজ করে যাচ্ছে কামরুল হাসান মন্ডল।
কামরুল হাসান মন্ডল ১৯৯৪ সালে শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজ শাখার সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক জীবনে পা রাখেন।
এরপর এই নেতা ২০০৩ সালে শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগের সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপরে জেলা যুবলীগের সদস্য পদে বহাল থেকে আজ পযত্ন সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
কামরুল হাসান মন্ডল বলেন,২০ বছর ধরে আমার এলাকার মানুষ আমাকে দেখে আসছে (জনপ্রতিনিধি হিসেবে)। আমাকে ভোট না দেওয়ার একটাই কারণ হতে পারে যে, ২০ বছর ধরে এই মুখটা তারা দেখতে দেখতে এখন বিরক্ত। এছাড়া আর কোনো কারণ নেই।
কামরুল হাসান বলেন, এই জনপ্রিয়তা একদিনে তৈরি হয়নি।কিন্তু তিনি নিজেকে মানুষের কাছে নিয়ে গেছেন পিতৃপরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে আপন পরিচয়ে। তিনি এলাকায় যান। বারবার যান। মানুষের কাছে যান, মানুষ তার কাছে যায়। তিনি তাঁর অঞ্চলের মানুষকে ভালোবাসেন, মানুষও তাঁকে ভালোবাসে। আর এ কারণেই তিনি আত্মবিশ্বাসী, তাঁর এলাকার মানুষ তাঁকে চাইবেই।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচন। এখনই দরজায় কড়া নাড়ছে উপ নির্বাচনের।
বাসা ছেড়ে কামরুল হাসান এখন ঘুরছেন আপন জনপদ কাওরাইদে।
নির্বাচন এলে এই হিসেবটা খুব করে সামনে এসে দাঁড়ায়। গ্রামে প্রতীক একটা প্রভাব রাখলেও, গ্রামের মানুষের উলেখযোগ্য একটা অংশই প্রভাবিত হয় জনপ্রতিনিধি দ্বারা। কে কতটা এলাকামুখো, কে কতটা মাটির কাছাকাছি তার হিসেব দল না রাখলেও মানুষ ঠিকই রাখে। তাই অনেক সময় দেখা যায়, কোনো দলের পরিচিত মুখেরও ভরাডুবি ঘটে যায় কোনো অপরিচিত জনমুখী জনপ্রতিনিধির কাছে।
তিনি আরো বলেন, জনপ্রতিনিধিদের শুধু নির্বাচন এলেই এলাকামুখী হলে চলবে না। তাদের কাছে তৃণমূল মানুষ কিছু চায়, সেটা তাদের বুঝতে হবে। মানুষের কাছাকাছি যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ শুধু নির্বাচন এলে, নির্বাচনের পরে এলাকায় তারা অতিথি পাখি, এমন হলে চলবে না। এটা খুবই দুঃখের যে, অনেক জনপ্রতিনিধিই জনবিচ্ছিন্ন থাকেন। জনগণ তাঁদের নাগাল পায় না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে জনপ্রতিনিধিদের। জনগণের জন্যই তাঁরা, এটা তাঁদের বুঝতে হবে। জনগণ ভোট দিয়েছে বলেই জনপ্রতিনিধি, এই কথাটা যেন জনপ্রতিনিধিরা ভুলে না যান। আর জনগণকে বুঝতে হবে তাদের ভালোমন্দ। যিনি ভোট দেবেন, নিশ্চয়ই তার ভালোমন্দ বিবেচনাবোধ রয়েছে। নইলে তো আর ভোটার হতেন না। জনবিচ্ছিন্ন কেউ জনপ্রতিনিধি হলে জনগণও দায় এড়াতে পারে না। তাদেরই অদূরদর্শিতার ফল হয় তা। জনগণের বিবেচনাবোধ, দূরদর্শিতার ওপরেই নির্ভর করে দেশ এবং তাদের ভাগ্য।