প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাস প্রান্ত : বন্দরনগরীর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএ এর তত্ত্বাবধানে চলা উন্নয়ন প্রকল্পগুলো আরও দ্রুত বাস্তবায়ন করার তাগিদ দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হতাশ করবেন না।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিডিএ ভবনের তৃতীয় তলায় সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সিডিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন সিডিএ চেয়ারম্যন মো. আবদুচ ছালাম।
মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার চট্টগ্রাম সফরে এসে সিডিএ’র বাস্তবায়নাধীন আউটার রিং রোডসহ কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শন করেন শ ম রেজাউল করিম।
মন্ত্রী বলেন, “চট্টগ্রামের উন্নয়ন, বিশেষ করে সিডিএ’র কর্মকাণ্ড নিয়ে আমি একটা ধারণা নিয়ে এসেছি। সচিব সাহেব ধারণা দিয়েছেন। এর আগে চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিকবার ঢাকায় বৈঠক হয়েছে, কথা হয়েছে। এতে আমার কিছু ধারণা হয়েছে। সেই জায়গায় আমি আরও প্রত্যাশা করি, কাজের গতি বাড়াতে হবে। কাজের গতি বাড়াতে গিয়ে যদি কোনো প্রতিকূলতা থাকে, আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা আপনাদের দেওয়া হবে।”
“কোনো অজুহাতে উন্নয়ন প্রকল্প থমকে থাকবে, গতি স্তিমিত হয়ে যাবে আর চট্টগ্রামের মানুষ ভোগান্তির শিকার হবে, অপরাধটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বা তার কাঁধে যাবে- এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সুতরাং যে যেখানে আছেন, সেখান থেকে আন্তরিকতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে”, বলেন তিনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, “কিছু কিছু প্রতিকূলতার কথা ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে বলেছেন। আমি নিজেও লক্ষ্য করেছি। আমরা কিছু কিছু প্রকল্প ত্বরান্বিত করার জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিয়েছি। সে ক্ষেত্রে তাদের তাগিদ দিতে চেয়ারম্যান সাহেবকে দেখেছি। আমি নিজেও বলেছি যে, আমরা কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। কাজের গতি বাড়াতে হবে।“
টানেলের কাজ এবং সিডিএ’র কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আসবেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “চট্টগ্রামে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি হতাশ হন যে- চট্টগ্রামে এত ফান্ড দিয়েও এখানে কোনো কাজ হয় না, একটা সময় দেখবেন প্রধানমন্ত্রীর শত ইচ্ছা থাকলেও তার মন কিন্তু আর ভালো থাকবে না আপনাদের জন্য। প্রধানমন্ত্রীকে হতাশ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে চট্টগ্রামের মানুষ। এই ক্ষতির মুখোমুখি চট্টগ্রামের মানুষকে হতে দেওয়া ঠিক হবে না।”
শ ম রেজাউল করিম বলেন, আমি চাই, উন্নয়ন প্রকল্পে যে যে অবস্থায় যেখানে আছেন, তিনি সবটুকু সততা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন।
চট্টগ্রামের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার উদাহরণ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর চেয়ে বেশি ফান্ড মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। এতে বোঝা যায়, চট্টগ্রামের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা কত। আপনারা যারা আছেন, সকলকে এটা উপলব্ধি করতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কাজের পরিসর নির্ধারণ করা আছে। যার যার গন্ডির ভেতরে থেকে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, একে অপরের পরিপূরক। নিজ নিজ দায়িত্বে সকলকে সমন্বয় করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা সকলে মিলে দেশের উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পেয়েছি।
নাগরিক সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র যেভাবে চট্টগ্রামের প্রতি সুদৃষ্টি রেখেছে, চট্টগ্রামের মানুষেরও দায়িত্ব রয়েছে। আমরা একটি খাল পরিষ্কার করছি, কেউ যদি বর্জ্য খালের ভেতরে ফেলে দেয়, তাহলে কোনো সমাধান আসবে না। শেখ হাসিনার সরকার, মন্ত্রী, সচিব বা চেয়ারম্যানের পক্ষে তো খাল প্রতিনিয়ত পাহারা দেওয়া সম্ভব না।
সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, বোর্ড সদস্যদের মধ্যে আশিক ইমরান, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব ও জসিম উদ্দিন শাহ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বোর্ড সদস্য কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন,কে বিএম শাহজাহান ও এম আর আজিম এবং সিডিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।