আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও জেলার পাঁচটি উপজেলায় মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
গতকাল রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তালিকা প্রকাশ করেন।
তালিকায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুনাংশ দত্ত টিটো, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পাড়িয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আহসান হাবীব বুলবুল, পীরগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখতারুল ইসলাম, রানীশংকৈল উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সইদুল হক, হরিপুর উপজেলায় চোরম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ জিয়াউল হাসান মুকুল মনোনয়ন পেয়েছে।
জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ৮জন, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ৪ জন, রানীশংকৈল উপজেলায় ৪ জন ,পীরগঞ্জ উপজেলায় ৬ জন এবং হরিপুর উপজেলায় ৪ জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
ঠাকুরগাঁও সদর-
টাকুরগাঁও সদর উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুনাংসু দত্ত টিটো। তিনি জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। কিন্তু দলীয় কতিপয় নেতার বিরুদ্ধাচারণের কারনে ১ লাখ ১৯ হাজার ভোট পেয়েও জয়ের মুখ দেখতে পারেননি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা-
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনীত আহসান হাবীব বুলবুল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা দবিরুল ইসলামের ছেলে এবং পাড়িয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: সফিকুল ইসলাম এবং তার ভাতিজা উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলাম জুয়েল। মনোনয়ন প্রশ্নে চাচা ভাতিজার লড়াই তুঙ্গে উঠলেও শেষ পর্যন্ত কেউ মনোনয়ন পেলেন না।
পীরগঞ্জ উপজেলা-
পীরগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনীত আখতারুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ।
তিনি ওই উপজেলার ৬নং পীরগঞ্জ ইউনিয়নের ৩ বারের নির্বাচিত ইউপি চেযারম্যান। তিনি প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ১৯৯২ সালে। দ্বিতীয়বার ২০০৩ সালে এবং সর্বশেষ ২০১১ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
রাণীশংকৈল উপজেলা-
এ উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: সইদুল হক। তিনি রানীশংকৈল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। তিনি ২০০৮ সালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন ছিলেন। ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকায় তিনি জয়ের মুখ দেখতে পারেননি। ২০১৪ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল কাদের এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো: শাহরিয়ার আজম মুন্নাও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করেন ।
হরিপুর উপজেলা-
হরিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রাপ্ত জিয়াউল হাসান মুকুল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি হরিপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এবং হরিপুর কেবি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তিনি ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে ৩য় স্থান দখল করেন। সেবার তার বিপক্ষে দলের একাধিক নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম ফেরদৌস টগর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল উদ্দীন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় মুকুল জয়ের মুখ দেখতে পারেনি। তিনি ভোট পেয়েছিলেন মাত্র ১৬ হাজার।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁওয়ের ৫ উপজেলার ভোট অনুষ্ঠিত হবে ২য় ধাপে। দ্বিতীয় ধাপে তফসিল ঘোষণার দিন ছিল ১০ ফেব্রুয়ারি, মনোয়নপত্র দাখিল ১৯ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৮ ফেব্র্রুয়ারি এবং ভোট গ্রহণ ১৮ মার্চ । জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭১২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ দুই হাজার ৯শত ৯৪ জন এবং মহিলা ভোটার ৪ লাখ ৯২ হাজার সাতশত ১৮ জন।