সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে রাজীবকুমারকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ

Slider সারাবিশ্ব

কলকাতা: রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে গোটা দেশের নজর ছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে। গতকালই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে সিবিআই। তদন্তে বাধা দেওয়া ও তথ্য লোপাটের চেষ্টা এবং আদালত অবমাননার দুটি আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। একই সঙ্গে সিবিআই-এর আর্জি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট রাজীব কুমারকে আত্মসমর্পণ করতে বা সিবিআইয়ের সামনে হাজির হতে নির্দেশ দিক। অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে তদন্ত হচ্ছে, তাতে রাজ্য প্রশাসন বাধা দিচ্ছে বলে আদালত অবমাননার মামলা হোক। মঙ্গলবার সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে একটি হলফ নামাও জমা দেওয়া হয়েছে। এদিন সকালে এই আবেদনের শুনানির শুরুতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা গোটা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। এর পরেই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, রাজীবকুমারকে আদালতে হাজিরা দিতে হবে এবং সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে হবে।

সিবিআইয়ের সঙ্গে আলোচনার জন্য সহযোগিতা করতে বলার পাশাপাশি কোনও নিরপেক্ষ জায়গায় আলোচনার কথা বলেছেন। জানা গেছে, মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে এই আলোচনা হতে পারে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের মতো কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই নির্দেশের ফলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বড় ধাক্কা খেয়েছে। আদালতের নির্দেশ জানার পর কলকাতায় ধর্ণা মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা প্রথমে বিরক্তি প্রকাশ করেন। পরে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, এটা আমাদের নৈতিক জয়। এটা মানুষের জয়। আইনের জয়। তিনি বলেছেন, আমাদের মামলা জোরালো। আমরা কখনওই বলি নি অসহযোগিতা করব। আমরা তদন্তকারীদের পূর্ণ সহযোগিতার পক্ষে। আমরা কোনও সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু এটা যা হয়েছে তা কেন্দ্রের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমি শুধু রাজীব কুমারের জন্য ধর্না দিচ্ছি না। দেশের সব অফিসারের জন্য দিচ্ছি। সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের আবেদন খারিজ করে বলে দিয়েছে কোনও আদালত অবমাননা হয়নি। এই জয় সংবিধানের। এই জয় সারা দেশের, দেশবাসীর, সংবিধান বাঁচাও আন্দোলনের।

তবে তিনি এই নির্দেশের পর ধর্ণা তুলে নেবেন কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, সব দলের সঙ্গে আলোচনা করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। কারণ এই লড়াই তার একার লড়াই নয়। বেআইনি অর্থলগ্নী সংস্থার তদন্তে ‘সহযোগিতা’ না করার অভিযোগ নিয়ে সিবিআই অফিসারেরা রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দেওয়া থেকেই কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাতের সুত্রপাত। কলকাতা পুলিশ সিবিআই আধিকারিকদের আটকে দেবার পাশাপাশি তাদের আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশ কর্তাদের অভিযোগ, সিক্রেট অপারেশনে এসেছিল সিবিআই। তাই আটকে দেওয়া হয়েছে। সিবিআই অবশ্য দাবি করেছেন, সব নথি নিয়েই তারা সেখানে গিয়েছিলেন। এর পরেই নজিরবিহীন ভাবে পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে পদস্থ পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করার পরই দেশ ও সংাবিধান বাঁচানোর জন্য ধর্মতলায় ধর্নায় বসেছেন তিনি। তার এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন দেশের সমস্ত বিরোধী নেতারা। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টির নেতা তেজস্বী যাদব এবং ডিএমকে নেত্রী কানিমোজি কলকাতায় এসে মমতার ধর্ণা মঞ্চে গিয়ে দেখা করে সংহতি জানিয়েছেন। আজই আসছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *