শ্রীপুরে ঝুটে ভরে গেছে অধিকাংশ পোশাক কারখানা আতঙ্কে মালিকরা!

Slider গ্রাম বাংলা


রাতুল মন্ডল, শ্রীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে বিভিন্ন পোশাক কারখানায় ঝুট ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দের কারণে কারখানার গোডাউনে জমা পড়ে রয়েছে শত শত টন ঝুট। এতে করে কারখানায় অগ্নিকান্ডের মত বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশঙ্কায় দিন পার করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি কারখানার ঝুট প্রায় এক মাস ধরে বিক্রি করতে পারছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক দিন আগ থেকে ঝুট বিক্রি করা বন্ধ হয়ে যায়। বেশির ভাগ কারখানায় পূর্বের সাংসদ এড.রহমত আলীর অনুসারীরা ঝুট ক্রয় করে থাকতেন। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নতুন সাংসদ মো.ইকবাল হোসেন সবুজ নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর অনুসারীরা শ্রীপুরের পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদেরই মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। শ্রীপুর থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছে একটি চিড়া মিলের ব্যবস্থাপক। এই ক্ষমতার পালা বদলের কারণে কারখানার ঝুট ব্যবসা বন্ধ হয়ে রয়েছে।

এদিকে কারখানা গুলোর গোডাউনের জায়গা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। এখন তারা কারখানার চার পাশে ঝুট বুঝাই বস্তা রেখে দিয়েছেন। ঝুটের বস্তা গুলোর কোঁয়াশায় ভিজে ব্যবহারের নষ্ট হয়ে পড়ছে। এগুলো বিক্রি করতে না পারলে কারখানা গুলো বেশ লোকশানে পরে যাবে।

উপজেলার টেপিরবাড়ি গ্রামে অবস্থিত ভিয়েলাটেক্স লিমিটেড ইউনিট-২ নামে একটি সুতা তৈরি কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এসএম সারোয়ার জাহান বলেন, আমাদের কারখানার গোডাউনে মাত্র কয়েক টন ঝুটের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। ইনসাফ এন্টার প্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা প্রতিদিন ঝুট বিক্রি করে থাকি। তবে তাঁরা প্রায় এক মাস ধরে ঝুট নিতে পারছেন না বলে আমাদের জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, যারা আমাদের সাথে ব্যবসায়ী চুক্তির করেছিলেন তাঁরা পূর্বের সাংসদ এড.রহমত আলীর অনুসারী। তবে নব-নির্বাচিত সাংসদ মো.ইকবাল হোসেন সবুজের অনুসারীরা তাদের ঝুট নিতে বাঁধা দিচ্ছেন।

একই মত প্রকাশ করে ইউনিগ্লোরী সাইকেল ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপক (হিসাব বিভাগ) আনিছুর রহমান খান বলেন, নির্বাচনের আগ থেকে কোন ঝুট বের করতে পারছি না। আমাদের কোম্পানীর সাথে চুক্তিকৃত প্রতিষ্ঠান ঝুট বের করতে গেলেই সংর্ঘের সৃষ্টি হয়।
আনোয়ারা নীট কম্পজিট লিমিটেড নামক কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) মো.দোলয়ার হোসেন ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন কারখানার ব্যবস্থাপকরা জানান নির্বাচনের আগ থেকে এখন পর্যন্ত ঝুট ব্যবসা বন্ধ রয়েছে।

শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মো.আল-আমিন বলেন, টেক্সটাইল স্পিনিংসহ বিভিন্ন পোশাক কারখানার যত ঝুট মুক্ত রাখা যায়। কারণ এই পর্যন্ত শ্রীপুরে যত গুলো কারখানায় আগুন লেগেছে এই ঝুট থেকে। সামন্য একটু ভুলের জন্য পুরো কারখানা পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, ঝুট থাকলে সেই আগুন নেভাতে অনেক সময় লাগে। কারখানার চার পাশে ঝুট থাকা মানে কারখানা অগ্নিকান্ডের ঝুঁকিতে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *