রংপুর: রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবু সোনা হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকারের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে একটায় রংপুর জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় দেন।
আদালতের পিপি আবদুল মালেক বলেন, বিচারক একমাত্র আসামি তাঁর স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৯ মার্চ রাতে বাবু সোনাকে ১০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তাঁর স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপা ও তাঁর কথিত প্রেমিক শিক্ষক কামরুল ইসলাম। এরপর তাঁর মরদেহ তাজহাট মোল্লাপাড়ায় কামরুলের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়।
৩ এপ্রিল মধ্যরাতে বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব আটক করে। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং মরদেহের অবস্থান সম্পর্কে তাদের জানান। সেই সূত্র ধরে ওই দিন রাতে মোল্লাপাড়ার ওই বাড়ির মেঝে খুঁড়ে নিহত আইনজীবী বাবু সোনার গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
গত বছরের ২১ অক্টোবর এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। ৩০ অক্টোবর থেকে এই হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। হত্যা মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক সম্পন্ন করা হয়।
এই মামলার প্রধান আসামিসহ দুই আসামি ইতিমধ্যে কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম গত বছর ১০ নভেম্বর ও অপর আসামি নিহত আইনজীবীর সহকারী মিলন মোহন্ত গত বছর ১৩ এপ্রিল কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এই হত্যা মামলার বাদী নিহত আইনজীবীর ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক তাঁর ভাইয়ের হত্যা মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমার ভাইকে আমরা আর ফিরে পাব না। কিন্তু এই রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
নিহত আইনজীবী রথীশ জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক, পূজা উদ্যাপন পরিষদের রংপুর বিভাগীয় কমিটির সভাপতি, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।