ঢাকা:আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৪ দলের শরিকেরা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করলে তাঁদের জন্য ভালো এবং সরকারের জন্যও ভালো। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তাঁরা তো বিরোধী দলে থাকবেন বলে অনেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমার মনে হয়, তাঁরা বিরোধী দলে থাকলে তাঁদের জন্য ভালো, আমাদের জন্য ভালো।
কাদের বলেন, ১৪ দলীয় ঐক্যজোট একটি রাজনৈতিক জোট। নির্বাচনী জোট আর রাজনৈতিক জোট, এটা ভিন্ন জিনিস। ১৪ দলের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, সেটা হচ্ছে রাজনৈতিক জোটের সম্পর্ক । মহাজোট নামের যে বৃহত্তর জোট, সেটা কিন্তু নির্বাচনী ঐক্যজোট। যেহেতু ১৪ দলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রাজনৈতিক জোটের, কাজেই তাঁদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক থাকবেই।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন বিরোধী দলে গেলে ঐক্য থাকবে না, তাঁরা সরকারেই থাকবেন। মেননের এই মন্তব্যের বিষয়ে কাদের বলেন, রাজনৈতিক জোটের প্রশ্ন যখন আসে, তখন তো আমরা একসঙ্গেই আছি। আমাদের জোট তো আমরা ভাঙিনি। এগুলো নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আরও আলোচনা হবে।
কাদের আরও বলেন, এটা মনে রাখা জরুরি মহাজোট কিংবা জোটে কিংবা ১৪ দলে কোনো প্রকার টানাপোড়েন নেই। আমাদের মধ্যে কোনো ব্যাপারে যদি ভুল বোঝাবুঝি থাকে, সেটা আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব।
১৪ দলের নেতারা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করুক, আওয়ামী লীগ চায় কি না— এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী দল বা বিরোধী কণ্ঠ যত কনস্ট্রাকটিভ (গঠনমূলক) হবে, পার্লামেন্টে থাকবে, ততই সরকারি দল কোনো ভুল করলে সেই ভুলটা সংশোধন করতে পারবে। কারণ বিরোধী দল না থাকলে তো একতরফা কাজ চলবে। বিরোধী দল থাকলে বিরোধিতা থেকে সরকারের কিছু শিক্ষণীয় বিষয় থাকবে। সমালোচনা থেকে শুদ্ধ হতে পারবে। সমালোচনা তো মানুষকে শুদ্ধ করে।
শনিবারের বিজয় সমাবেশের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। মধ্যে একদিন বাকি। আমাদের বিজয় উপলক্ষে আমাদের মঞ্চ, সাজসজ্জা, প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশে বিভিন্ন শাখা এবং পার্টির নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত। একটি বিশাল বিজয় সমাবেশ হবে। বিশাল বিজয়ের পরে আমরা সেভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করিনি। আমরা সংযম, সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করেছি। আমাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যাতে করে কোনো প্রতিহিংসার বিষয় না আসে, সে জন্য আমরা আমাদের নেত্রীর নির্দেশ আমাদের নেতা-কর্মীরা ধৈর্য এবং সংযম প্রদর্শন করেছি।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিষয়ে কাদের বলেন, বিএনপির আসলে এখন লেজে গোবরে অবস্থা। তাঁদের ঐক্যফ্রন্টে এখন ভাঙনের সুর দেখা যাচ্ছে। তাঁদের দেখে ভয় হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ফখরুল সাহেবের ইদানীংয়ের আচার-আচরণ দেখে তাঁকে ভয়ংকর ড্রাইভার মনে হচ্ছে এবং বিএনপি নেতা-কর্মীদের কথাবার্তাতেও একই সুরের ছোঁয়া পাওয়া যাচ্ছে।
কাদের বলেন, আমরা খুব ধৈর্যের সঙ্গে বিষয়টি দেখছি। আমরা অতি সহিষ্ণুতার সঙ্গে বিষয়টি দেখছি। কেননা তাঁদের হেরে যাওয়ার একটি বেদনা আছে, কষ্ট আছে। সেই কষ্ট থেকেই তাঁরা বেপরোয়া হতে পারেন। কিন্তু আমরা সরকারি দল। আমরা দেশ চালাচ্ছি, আমাদের একটি দায়িত্ব আছে। বিশাল একটা বিজয়ের সঙ্গে বিশাল একটা দায়িত্ব আমাদের আছে।