ফেনী: ফেনী শহরের রামপুর এলাকায় একটি বাসায় চার তরুণীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগে মো. ওমায়ের (১৯) ও আরিফুল ইসলাম ওরফে আরমান (৩৩) নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে শহরের রামপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত সোমবার রাতে চারজনের মধ্যে এক তরুণী বাদি হয়ে কাওসার বিন কাসেমসহ অজ্ঞাতনামা কয়েক জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
মামলার বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রেমের প্রলোভন দিয়ে ফুঁসলিয়ে চার তরুণীকে এনে ফেনী শহরের রামপুর এলাকায় একটি বাসায় আটকে রাখে জনৈক কাওসার বিন কাসেম। দীর্ঘ ছয়মাস ধরে আসামী নিজেও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওই তরুণীদের জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক করতে বাধ্য করা হয়। এ সময় ওই তরুণীরা অসামাজিক কাজে অসম্মতি জানালে তাদেরকে সিগারেটের ছ্যাঁকা, বৈদ্যুতিক শর্ট ও মারধর করে বিভিন্নভাবে অমানসিক নির্যাতন চালানো হতো।
গত ৭ই জানুয়ারি ওই বাসার ভেতরে তরুণীদের কান্না ও চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে বন্দি অবস্থায় চার তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাসার মালিকসহ নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যায়।
এ সময় ওই বাসার বিভিন্ন কক্ষ থেকে ৫৩ পিস ইয়াবা বড়িসহ মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নির্যাতনের আলামত জব্দ করে পুলিশ।
এদিকে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আবু তাহের জানান, উদ্ধারকৃত চার তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলমত পাওয়া গেছে। তবে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম জানায়, উদ্ধারকৃত চার তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে ফেনীর বিচারিক হাকিমের আদালতে উপস্থিত করলে বুধবার ২২ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। ধর্ষণ মামলা ছাড়াও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামী কাওসার বিন কাসেমকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালাচ্ছে।