আগামী ৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের স্থগিত হওয়া তিন কেন্দ্রের ভোট গ্রহণে কেন্দ্র দখল হয়ে গেলেও মৃত ও প্রবাসীদের ভোট যেন প্রদান না করতে পারে এজন্য নির্বাচন কমিশনে দরখাস্ত করেছেন বিএনপি প্রার্থী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া।
এই আসনের ১৩২ কেন্দ্রের মধ্যে ১২৯ কেন্দ্রের ফলাফলে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া পেয়েছেন ৮২ হাজার ৭২৩ ভোট আর আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈন উদ্দিন ‘কলার ছড়ি’ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭২ হাজার ৫৬৪ ভোট। বাকি স্থগিত তিন কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৫৭৪। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফলে তিনি বিএনপি প্রার্থী ১০ হাজার ১৫৯ ভোটে এগিয়ে আছেন।
তবে বিএনপির প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া নির্বাচন কমিশনে এ বিষয়ে এক লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন আসনটির স্থগিত তিন কেন্দ্রের মোট ভোটারের মধ্যে মৃত ও প্রবাসী মিলে মোট রয়েছে ৫৬৩ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে মৃত ১২০, প্রবাসে রয়েছেন ৪৫২, কারাগারে রয়েছেন ০৪ ও একজন ভোটার তিনি ভোটের স্থান পরিবর্তন করেছে।
লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয় এই ৫৬৩ ভোট বাদ দিয়ে স্থগিত তিন কেন্দ্রের শতভাগ ভোট কাস্ট হলে এবং এসব ভোট তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর পক্ষে পড়লেও তিনি ১৪৮ ভোটে বিজয়ী থাকেন। তবে কেন্দ্র তিনটিতে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হলে দুই তৃতীয়াংশ ভোট তার পক্ষেই পড়বে বলে বিএনপি প্রার্থী দাবি করেন।
এদিকে পহেলা জানুয়ারি স্থগিত ৩টি কেন্দ্র ভোটের তারিখ ঘোষণা পর এই নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তী জারি হয়। তার পর মাত্র ১২ জন প্রবাসী আশুগঞ্জ এসেছেন। এদের মধ্যে ৮ জন ছাড়া বাকীরা এই ৩ কেন্দ্রের ভোটার নন।
এই দিকে স্থগিত কেন্দ্রগুলির ভোটারা বিদেশে থাকার তথ্য প্রকাশ হবার পর আ.লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা ঝাঁকে ঝাঁকে প্রবাসীরা আশুগঞ্জে ভোট দিতে আসছেন এরকম খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করে চলছেন। বিএনপি প্রার্থীর দাবি কেন্দ্র দখল করে সীল মেরে মৃত ও প্রবাসী মিলিয়ে সব ভোট কাস্ট করে তার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার দুঃস্বপ্ন থেকেই এই ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এদিকে এই ধরনের প্রচারণায় আশুগঞ্জ উপজেলার প্রবাসীরা বিব্রতবোধ করছেন। তারা স্থানীয় রাজনীতিতে তাদের না জড়ানোর জন্য রাজনীতি নেতাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন। আশুগঞ্জ উপজেলার খোকন মিয়া নামে একজন সৌদি প্রবাসী তার ফেসবুক পেজে লিখেন, বললেই দেশে আসা যায় না। আসতে গেলে ভিসা, টিকেট ও কর্মরত প্রতিষ্ঠানে কাছ থেকে অনুমতি নিতে আসতে হয়। সেখানে এক সাপ্তাহ মধ্যে যাওয়া একটি অস্বাভাবিক বিষয়। এসময় তিনি প্রবাসীদের নিয়ে এই রকম সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
নির্বাচন কমিশনে অভিযোগের বিষয়ে রবিবার বিকালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়ার সাথে যোগাযোগ করনা হলে তিনি জানান, আমি প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তসহ লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছি। আশা করি নির্বাচন কমিশন তা যথাযথ ভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।