ইসির বৈঠক থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ওয়াকআউট

Slider টপ নিউজ


বিবিসি: ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। – ছবি : বিবিসি
দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে নিজ দলের প্রার্থীদের ওপর অব্যাহত সহিংস হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে কাছে প্রতিকার চাইতে গিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। তবে আলোচনা সন্তোষজনক হয়নি অভিযোগ তুলে আলোচনা অসম্পূর্ণ রেখেই তারা ওয়াকআউট করেন।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে যান ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জোটের শীর্ষ ১০ জন নেতা।

এ সময় তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ও রফিকুল ইসলাম এবং নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের সাথে বৈঠকে অংশ নেন।

দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা ওই বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন।

তবে সব জানানোর পরও বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সন্তোষজনক নয় এমন অভিযোগ তুলে বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করার কথা জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীদের ওপর যে তাণ্ডব চলছে সেই পরিস্থিতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে আমরা সেই ধরণের কোনো আচরণ পাইনি, যে তিনি এটাতে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন।’

এ সময় দেশব্যাপী বিএনপি প্রার্থীদের ওপর বিভিন্ন হামলার ঘটনার উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে এই নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ তারা সৃষ্টি করতে পারছে না।’

এই নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা দেখে মনেই হয় না যে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী আছে। এ ধরণের হামলা, গ্রেফতার যদি চলতেই থাকে তাহলে ভোটাররা ভোট দিতে যাবে কিভাবে?’

বৈঠকে যোগ দেয়ার আগ মুহূর্তে বিএনপি মহাসচিব বিবিসি বাংলাকে জানান যে, সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাদের প্রার্থীদের ওপর যে হামলা হচ্ছে সেই উদ্বেগের কথা জানাতেই তারা নির্বাচন কমিশনে এসেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীদের ওপর একের পর এক হামলা হচ্ছে। অথচ এজন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো ধরণের সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমরা এক ধরণের অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি।’

‘এখন নির্বাচনের আগে যে ক’দিন বাকি আছে সে সময়ে আমাদের প্রার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে প্রচারণা চালাতে পারে, সেই দাবি নিয়েই আমরা এসেছি।’

এ সময় নির্বাচনী প্রচারণায় ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং যেসব নেতাকর্মী আটক হয়েছেন সে বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে তালিকা দেন তারা।

তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের এসব অভিযোগের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি।

এদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা আজ ধানের শীষের পক্ষে ঢাকায় যে পথসভা কর্মসূচি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, তা স্থগিত করা হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই স্থগিতের কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ উল্লেখ করে বলা হয় যে, বাধার কারণেই এই প্রচারণা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে ঐক্যফ্রন্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *