সুন্দরবনের ভেতরের নৌপথগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্ধের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে শ্যালা নদীসহ দুর্ঘটনা ও পরিবেশ বিনষ্টের আশঙ্কা রয়েছে এমন নৌপথ স্থায়ীভাবে বন্ধে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ এবং এ ব্যাপারে নাগরিক সমাজের দাবি নৌপরিবহণ মন্ত্রী কর্তৃক প্রত্যাখাত হওয়ার সংবাদে গভীর উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন টিআইবি।
সোমবার এক সংবাদ বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটি।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে নৌপথ যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে তার চাক্ষুষ প্রমাণ মিলেছে ফার্নেস তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে যাওয়ার ঘটনায়। সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে যান্ত্রিক যান চলাচল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও মানদ-ের লঙ্ঘন।’
তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনে নৌ চলাচলের অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে যারা জড়িত ছিল, তাদেরকেই সুন্দরবনের বিপর্যয়ের দায় নিতে হবে। আর সরকার যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয় এবং নৌপথ বন্ধ না করে তাহলে সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান হারাবে তো বটেই, এমনকি শিগগিরই এ বন বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হবে। অন্যদিকে এ ধরনের ব্যর্থতায় সুন্দরবনের পরিবেশ দূষণের দায় সরকারকেই নিতে হবে।’
ড. জামান বলেন, ‘সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে জাহাজ ডুবির কারণে সাড়ে তিন লাখ লিটারের বেশি তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়লেও তাৎক্ষণিক করণীয় সম্বন্ধে সরকারি সংস্থাগুলোর কোনো প্রস্তুতি ছিল না, এমনকি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ব্যর্থতা, দায়িত্বহীনতা, অদক্ষতা ও সমন্বয়হীনতার পরিচয় দিয়েছে। অন্যদিকে এ জাতীয় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় জনবল এবং আধুনিক সরঞ্জামের অপ্রতুলতা সরকারের দূরদৃষ্টির অভাবকেই প্রকট করে তুলেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশবাসীর জোরালো দাবি এবং ইউনেস্কো ও রামসার কনভেনশনসহ বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সংস্থার উদ্বেগ সত্ত্বেও সরকার সুন্দরবন রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই দেশীয় সমাধানকে প্রাধান্য দিয়ে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক কারিগরি সহযোগিতা গ্রহণের পদক্ষেপ নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তেল অপসারণ এবং বনের অভ্যন্তরে নৌপথ বন্ধ করে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই শ্বাসমূলীয় বন ও জীববৈচিত্র রক্ষায় সরকারকে আরো বেশি উদ্যোগী হতে হবে।’