ঢাকা:নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, নির্বাচন অর্থ হচ্ছে-সহিংসতামুক্ত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমরা করতে পারব না, তা কখনও হতে পারে না।
তিনি বলেন, যে কোনো মূল্যে নির্বাচনে ভীতিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একজন ভোটার যেন নির্বিঘ্নে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজের ইচ্ছামতো ভোট দিয়ে নিরাপদে ফিরতে পারেন, এর বেশি কিছু চাওয়ার নেই।
রোববার সকালে সিলেটে বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।
আগামীকাল থেকে দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে জানিয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন। সেনাবাহিনী আমাদের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক।
‘আমি মনে করি, অতীতের সংসদ নির্বাচনগুলোতে সেনা মোতায়েনের মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সর্বোত্তম ব্যবহার আবশ্যক।’
তিনি বলেন, এবারের জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ সমগ্র জাতির আস্থার সংকট মোচন করেছে। একটি কথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই-নির্বাচনী দায়িত্ব যারা পালন করবেন, তাদের কাছে পক্ষপাতমূলক আচরণ কখনও আশা করি না।
‘আমরা কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের প্রতি অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে দায়িত্ব পালন করতে আসিনি। সব প্রার্থী আমাদের কাছে এক ও অভিন্ন,’ বললেন এই ইসি।
তিনি বলেন, তাদের প্রতি আচরণে আপনাদের ভূমিকা হবে বিচারকের মতো নির্মম। তাই কঠোরভাবে নিরপেক্ষতার মধ্য দিয়ে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশা রাখি।
‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে অতিগুরুত্বপূর্ণ পবিত্র আসনে যারা বসবেন, তারা ভোটারদের ভোটের মাধ্যমে আসবেন-এটিই হবে প্রত্যাশা। পেশিশক্তি বা কালোটাকার মাধ্যমে কেউ যেন সেই আসনে বসতে না পারেন’, মন্তব্য মাহবুব তালুকদারের।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতার পূর্বশর্ত যদি হয়ে থাকে গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের পূর্ব শর্ত হয়ে থাকে নির্বাচন-তা হলে এ নির্বাচনকে অবশ্যই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হতে হবে।
‘এটি বিজয়ের মাস। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শর্ত নিয়ে ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমরা করতে পারব না, তা কখনও হতে পারে না।’
একটি শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের ঋণ শোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এতে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও চার জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, মারামারি ও উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়, তখন আরেকটু গরম হয়ে যায়। আর উত্তাপ না থাকলে ভালো লাগে না।
ভোটের মাঠে সাম্প্রতিক সহিংসতা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম।
রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমিতে ‘নির্বাচনে নারীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তাবিষয়ক সচেতনতা’ কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সেখানে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নে ইসি বলেন, বিচারিক ক্ষমতা কারও নেই। পুলিশের নেই, র্যাবের নেই, সেনাবাহিনীর নেই-কারও নেই। যার হাতে অস্ত্র থাকে তার কিন্তু বিচারিক ক্ষমতা থাকে না। কারণ এটি বাংলাদেশের সংবিধানের জন্য স্ববিরোধী।