গাজীপুর: গাজীপুর-২ আসনের বিএনপি’র সংসদ সদস্য প্রার্থী সালাহ উদ্দিন সরকার বৃহষ্পতিবার হাজিরা দিয়ে আদালত থেকে পালিয়ে গেছেন।
এসময় বিএনপি’র আরো ২৩ নেতা-কর্মী তার সঙ্গে পালিয়েছেন। পরে আদালত উপস্থিত অপর ১২জনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এসময় আদালত মামলার ২৮ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে আদেশ দেন। গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেস্ট শামীমা খাতুনের আদালত এ আদেশ দেন।
মামলা ও চার্জশীট সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর শহরের রাজবাড়ি রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে ২০১৪ সালের ৯ নবেম্বর বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচী চলাকালে নিজেরা নিজেরা মারামারি করতে থাকে। এসময় পুলিশ আইন শৃংঙ্খলা ও জানমাল রক্ষার স্বার্থে শর্টগানের গুলি এবং টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে। এ ঘটনায় জয়দেবপুর থানার এসআই মাহমুদ হাসান বাদি হয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ মান্নানসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা [৫২ (১১) ২০১৪] দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এনায়েত হোসেন গত ১৯ আগষ্ট এ মামলায় ৪০জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
গাজীপুরের কোর্ট পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান, পুলিশের কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে দায়েরকৃত এ মামলার আসামীরা পুলিশ রিপোর্ট (চার্জশিট) প্রদান পর্যন্ত আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ি বৃহস্পতিবার ছিল ওই মামলার ধার্য তারিখ। এদিন সকালে সালাহ উদ্দিন সরকারসহ মামলার ৩৬ জন আসামী গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে কাগুজে হাজিরা দিয়ে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক প্রথম পর্বের শুনানীর পর বিকেলে দ্বিতীয় দফা শুরুর ঘোষণা দিয়ে আদালত থেকে নেমে যান। আদালতের দ্বিতীয় দফায় ১২জন হাজির হলেও গাজীপুর-২ আসনের বিএনপি’র সংসদ সদস্য প্রার্থী সালাহ উদ্দিন সরকারসহ অন্য ২৪ জন পালিয়ে আদালতের ডাকে গড় হাজির ছিলেন। পরে বিচারক আদালতে উপস্থিত সাবেক গাজীপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল হক মোল্লা, গাজীপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বশির আহম্মদ, গাজীপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর তানভীর আহমেদ, গাজীপুর মহানগর সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর মো. খায়রুল আলম, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি শিরিন চাকলাদার, মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইফুল ইসলাম টুটুল, জেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কালিম লস্কর, মহানগরের ২৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদ, মহানগর বিএনপির নেতা ইজাদুর রহমান, কামরুল ইসলাম ও মো. রিপনকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন এবং ওই ২৪জনসহ পলাতক মোট ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ইস্যূ করেন।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, এ মামলায় সকলেই চার্জশীট পর্যন্ত জামিনে ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ঘটনার প্রায় ৫বছর পর এই চার্জশীট দিয়েছে। যাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা কারাগারে থাকে এবং নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে না পারেন।