ঢাকা: বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ৭ দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্যকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। ইশতেহারে নতুন ধারার রাজনীতি প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেয়া দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে কোন ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বাতিল করা হবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। পুলিশ ও সামরিক বাহিনী ছাড়া অন্যান্য সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স সীমা থাকবে না। এতে বলা হয় ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে। পরপর দুই মেয়াদের বেশি কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না।
যুদ্ধাপরাধের বিচার চলমান থাকবে।
রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের স্বাগত বক্তব্যের পর ইশতেহার পড়ে শোনান মাহমুদুর রহমান মান্না। এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ইশতেহারে ১৪ দফা প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। ইশতেহারে বলা হয়, নির্বাচনে জিতে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের কল্যাণে সরকার পরিচালনা করবে। এই পরিচালনার মূলনীতি হবে ঐক্যমত্য, সকলের অন্তর্ভূক্তি এবং যে কোনো রকম প্রতিহিংসা থেকে মুক্ত থাকা। ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’ সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বর্ণিত এই নীতির ভিত্তিতে সরকার পরিচালণায় যাবতীয় পদক্ষেপের ভিত্তি হবে রাষ্ট্রের মালিকগণের মালিকানা সুদৃঢ় করা। রাষ্ট্রের এই মালিকানা শুধুমাত্র নির্বাচনে জেতা দলের মানুষের নয়, এই মালিকানা থাকবে নির্বাচনে পরাজিত দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদেরও। এই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে নির্বাচনে পরাজিতদের মতামত এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। এই রাষ্ট্র নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পণা আছে, নির্বাচনে জিতলে পরবর্তিতে সেটা আমরা জনগণের সামনে নিয়ে আসবো। এই অঙ্গীকারে আমরা শুধু সেই বিষয়গুলোকে স্থান দিয়েছি যেগুলো আগামী ৫ বছরের মধ্যে আমরা সম্পন্ন করব।
প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে জাতীয় ঐক্য গড়া, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে পরপর দুই মেয়াদের বেশি কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিকরদের নিরাপত্তা বিধান, তৈরি করা হবে নির্বাচনকালীন সরকারের বিধান, প্রথম বছরে বাড়বে না বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম, নিশ্চিত করা হবে প্রবাসীদের ভোটাধিকার, সব নাগরিককে স্বাস্থ্য কার্ড দেয়া হবে, পুলিশ ও সামরিক বাহিনী ব্যতিত সরকারি চাকরিতে প্রবেশের কোনো বসয়সীমা থাকবে না, পিএসসি-জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ও গুম পুরোপুরি বন্ধ করা হবে, অর্থ পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা হবে এবং সরকারি চাকরিতে শুধুমাত্র অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা ছাড়া আর কোনো কোটা থাকবে না।