চট্টগ্রাম:চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর-পতেঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ লতিফের স্ত্রীর বড় ভাই তোফায়েল আহমেদ রফিক (৬০) নিজ বাসায় খুন হয়েছেন। মাসখানেক আগে বাসায় রাখা উপজাতি এক কাজের ছেলে তাকে খুন করে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর গোসাইলডাঙ্গা এলাকার বাসা থেকে তোফায়েল আহমেদ রফিকের লাশ উদ্ধার করে বলে জানান নগর পুলিশের এডিসি-বন্দর আরেফিন জুয়েল।
তিনি জানান, তোফায়েল আহমেদ রফিক পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি নগরীর গোসাইলডাঙ্গার বারিক বিল্ডিং এলাকার বনেদি ব্যবসায়ী প্রয়াত হাজী বারিক মিয়ার প্রথম পূত্র। লাশ উদ্ধারের সময় তার মাথায় প্রচন্ড আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাশ উদ্ধারের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বন্দর থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ জানান, মাথায় গুরুতর আঘাতের পর রফিকের মৃত্যু হয়েছে। বিকেল ৫ টার দিকে তাকে খুন করা হয়েছে। সেসময় তাদের বাসায় কেউ ছিল না। সন্ধ্যার দিকে তার এক ছেলে বাসায় ফেরার পর বাবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে দ্রুত আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, বারেক মিয়া স্কুলের গলিতে নিজস্ব ভবনের ফ্ল্যাটে থাকতেন তোফায়েল আহমেদ রফিক। ওই ফ্ল্যাটে তার দেখাশুনা করতেন ৩-৪ জন গৃহকর্মী। মাসখানেক আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে একজন উপজাতিকে তিনি বাসায় কাজের জন্য নিয়ে আসেন। এ ঘটনার পর থেকে ওই গৃহকর্মী পলাতক রয়েছে। ওই গৃহকর্মীর হাতে তিনি খুন হয়েছে বলে ধারণা করছি আমরা।
তিনি জানান, দু‘দিন আগে তোয়ায়েল আহমেদ নিজের চিকিৎসার জন্য ব্যাংক থেকে পাঁচ লাখ টাকা তুলে আনেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাধে উপজাতি গৃহকর্মী তোফায়েল আহমদে রফিককে খুন করে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই উপজাতি গৃহকর্মীর কোন নাম-ঠিকানাও পরিবারের কেউ দিতে পারেনি। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।
স্বজনরা জানিয়েছেন, তোফায়েল আহমেদ রফিকের চার মেয়ে ও দুই ছেলে। তার স্ত্রী মারা গেছেন। চার মেয়েরও বিয়ে হয়ে গেছে। তবে দুই ছেলে এখনও অবিবাহিত। চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় রফিক একা থাকতেন। ছেলেরা থাকতেন ওপরের তলায়।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তার এক ছেলে এসে দোতলায় বাবার কক্ষ বন্ধ দেখে দরজায় ধাক্কা দেন। বারবার ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে পেছনের সিঁড়ি দিয়ে উঠে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় কক্ষের ভেতরে পড়ে থাকতে দেখতে পান। এ সময় তার মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বন্দর থানার এস আই নিদুল জানান, সন্ধ্যা ৭ টার দিকে গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় একটা খুনের ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি স্থানীয় বারেক মিঞার বড় ছেলে রফিক খুন হয়েছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে রক্তমাখা একটি ইট পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য এবং চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি এম এ লতিফ রফিকের ভগ্নিপতি।