ঢাকা: আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরুর আগে আগামীকাল দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন। এরপর টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান এ কথা বলেন।
আবদুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ১৩ ডিসেম্বর সড়কপথে ঢাকা ফেরার পথে ফরিদপুরের ভাঙ্গা মোড়, ফরিদপুর মোড়, রাজবাড়ী রাস্তার মোড়, পাটুরিয়া ঘাট, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, ধামরাই রাবেয়া মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও সাভার বাসস্ট্যান্ডে নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।
আবদুর রহমান বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশেও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি রহিত করা হয়েছে। ড. কামাল হোসেনের মতো বিএনপি নেতা-কর্মীদের এ বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকার পরও খালেদা জিয়ার মতো এতিমের টাকা ‘আত্মসাৎকারী’ দুর্নীতিবাজের পক্ষাবলম্বন করে, নির্বাচনে সুযোগ প্রদানের বিভিন্ন অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে কলুষিত করে একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজের পক্ষে জনগণের সহানুভূতি সৃষ্টির অপকৌশল হিসেবেই এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
আবদুর রহমান আরও বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অশ্রুসজল নয়নে জাতির সামনে বলেছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়াই তাঁরা এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। কারণ তাঁরা জানতেন বিএনপি যতই রাজনৈতিকভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করুক না কেন, আইনের চোখে খালেদা জিয়া একজন এতিমের টাকা ‘আত্মসাৎকারী’, সাজাপ্রাপ্ত ‘দুর্নীতিবাজ’। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তিনি নির্বাচনে ও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন না।
ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আবদুর রহমান বলেন, ক্ষমতার মোহে ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের বিরোধিতা করছেন। ড. কামাল হোসেন এই সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭২ সালের সংবিধানের জন্মলগ্ন থেকেই সংবিধানে অনুচ্ছেদ ৬৬ লেখা রয়েছে। ড. কামাল হোসেন আজ ক্ষমতার ‘মোহে’ নিজের বাংলাদেশের সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের বিরোধীতা করছেন। কী বিচিত্র এ দেশ।
বিএনপি দেশের উচ্চ আদালতকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে অভিযোগ করে আবদুর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ’ খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির পাঁয়তারা করতে তিনটি রিট পিটিশন করা হয়েছে। বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগেও এসব আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। হাইকোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানকে অনুসরণ করেছেন। তিনি আরও বলেন, তবে জাতির দুর্ভাগ্য এই যে, হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ নিয়ে বিএনপি তার চিরাচরিত মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়েছে। বিএনপির অপরাজনীতি পরিহার করে, দেশের আইন-সংবিধান, আদালত ও বিচার প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থাভাজন ও শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্বাচনী প্রচার কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।