প্রতিনিয়ত পারিবারিক অশান্তির কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ভারতের শিলিগুড়ির পাইপলাইন এলাকার বাসিন্দা সুপ্রভাত সাহা। কিন্ত্ত এর ফল যে এত মর্মান্তিক হতে পারে তা আঁচ করতে পারেননি পাড়া-প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়স্বজনরা কেউই। অবশেষে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও নাবালিকা মেয়েকে বিষ খাইয়ে খুন করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন সুপ্রভাত৷। বৃদ্ধা মায়ের মৃত্যু নিশ্চিত করতে বিষ খাইয়ে খুনের পর সু্প্রভাত মায়ের গলায় গামছার ফাঁসও দিয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ।
গত কয়েকদিন ধরেই বন্ধ ছিল ঘরটি। শনিবার সকালে সেখান থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে। প্রতিবেশীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদের নাম সুপ্রভাত সাহা (৩৫), মিঠু সাহা (৩২), গীতা সাহা (৬০) এবং মানসী সাহা (৭)।
পুলিশ জানিয়েছে, সুপ্রভাত পেশায় ব্যবসায়ী। গীতাদেবী সম্পর্কে সুপ্রভাতের মা। মিঠু সাহা স্ত্রী এবং মানসী মেয়ে। মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) ও জি পাল জানান, সুইসাইড নোটেই স্পষ্ট, তিনজনকে খুন করে আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবক। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সুপ্রভাতের ঘর থেকে পাওয়া সুইসাইড নোটে লেখা ছিল ‘পারিবারিক বিবাদ চরমে ওঠায় অসহ্য হয়ে এই পথ বেছে’ নিলেন তিনি। একমাত্র মেয়ে মানসী কোথায় থাকবে– এই নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেও তাকেও সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সেই কারণেই খুন করেন মানসীকেও।
পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির গেটের তালা এবং ঘরের দরজাভেঙে প্রথমে সুপ্রভাতের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। পাশেই পড়ে ছিল গীতা সাহা এবং মিঠুদেবী এবং মানসীর প্রাণহীন দেহ। লাশগুলিতে পচন ধরে গিয়েছিল।
পুলিশ এবং স্হানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিলিগুড়ির গেটবাজারে সুপ্রভাতের একটি দোকান রয়েছে। গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা করা ছাড়াও সুতোর দোকান রয়েছে তাঁর। দু’বছর আগে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে ওই দোকানঘরটি নেন তিনি। পাইপলাইনে যে বাড়িতে সপরিবার থাকছিলেন সেটিও সাত লাখ টাকায় কিনেছিলেন।