ঢাকা: মনোনয়নের চিঠি হাতে বরেণ্য চিত্রনায়ক ফারুক (আকবর হোসেন খান পাঠান)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়ামনোনয়নের চিঠি হাতে বরেণ্য চিত্রনায়ক ফারুক (আকবর হোসেন খান পাঠান)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়ামুক্তিযোদ্ধা ও বরেণ্য চিত্রনায়ক ফারুক (আকবর হোসেন খান পাঠান) রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সেই স্কুলজীবন থেকে। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবেননি কখনোই। ভালোবেসে শুধু চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গেছেন। কয়েক মাস ধরে শোনা যাচ্ছিল, চলচ্চিত্রের ‘মিয়া ভাই’ খ্যাত ফারুক এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন। শুরু থেকেই তাঁর স্বপ্ন ছিল বাপ-দাদার এলাকা কালীগঞ্জকে ঘিরে। তবে তিনি বলেছিলেন, দেশের যেকোনো জায়গা থেকে লড়ার মতো যোগ্যতা আছে তাঁর। কারণ সারা দেশের মানুষই তাঁর ভালোবাসার এবং খুব আপন।
অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। কয়েক দিন ধরে প্রচার হয়, গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) নয়, ফারুককে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান থেকে প্রার্থী করা হবে। আজ রোববার বিকেলে জানা গেছে, ফারুককে ঢাকা-১৭ (গুলশান, বনানী, ঢাকা সেনানিবাস ও ভাষানটেকের কিছু অংশ) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হওয়ার চিঠি পেয়ে ভীষণ খুশি ও কৃতজ্ঞ দেশের চলচ্চিত্রের গুণী এই অভিনেতা। আওয়ামী লীগের হয়ে ঢাকা-১৭ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার মধ্য দিয়ে কালীগঞ্জের এই ভোটার নির্বাচনে লড়বেন গুলশান-বনানী-ঢাকা সেনানিবাস-ভাষানটেকের কিছু অংশের এলাকায়।
এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাঁদের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে, আজ রোববার সকাল থেকে তাঁদের হাতে দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষর করা দলীয় মনোনয়ন তুলে দেওয়া হয়। বিকেলে চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি হাতে পান ফারুক। এরপর তাঁর সঙ্গে কথা হয় । তিনি বললেন, ‘আমি সত্যি খুব আবেগতাড়িত। সম্মানিত বোধ করছি দলের এমন মূল্যায়নে। এ দেশের মানুষকে অনেক ভালোবাসি। এ দেশের মানুষও আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে। এই ভালোবাসার কথা কখনোই ভুলতে পারব না। আমি শুধু ঢাকা-১৭ এলাকার কাজ করব তা কিন্তু নয়, দলের প্রয়োজন ও দেশের মানুষের টানে যেকোনো প্রান্তে ছুটে যাব। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’
শুরু থেকেই তো গাজীপুর-৫ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন, কিন্তু ঢাকা-১৭ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর কী মনে হয়েছে? ফারুক বলেন, ‘আমি শুরু থেকে বলে আসছি, সারা দেশের মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমি দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে লড়ার যোগ্যতা রাখি। আমার ধারণা, দল এবং সভানেত্রী শেখ হাসিনা হয়তো ভেবেছেন, আমাকে ঢাকা-১৭ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। নেত্রীর এই সিদ্ধান্তকে আমি শ্রদ্ধা করি।’
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গুণী এই অভিনেতা থাকেন ঢাকার উত্তরায়। কথা প্রসঙ্গে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কোন এলাকার ভোটার? জোরে হাসলেন এবং বললেন, ‘আমি তো কালীগঞ্জের ভোটার।’
চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক অনেক দিন অভিনয় থেকে দূরে আছেন। ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। অভিনয় না করলেও চলচ্চিত্রের নানা সংকটের সময়ে ফারুককে পাওয়া গেছে। অনিয়মেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতেও তাঁর উপস্থিতিতে সব সময় চোখে পড়েছে। ছয় দফা আন্দোলনের পর মুক্তিযুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
ঢাকা-১৭ আসন থেকে ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ২০১৪ সালে নির্বাচনে এই আসনে সাংসদ হন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের এস এম আবুল কালাম আজাদ।