ঢাকা:জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ৩০০ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২৮ তারিখ মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ সময়। এই সময়ের আগেই অধিকাংশ প্রার্থী চূড়ান্ত করার চেষ্টা করা হবে। বাকিটা চূড়ান্ত করা হবে প্রত্যাহারের সময়সীমার মধ্যে। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মুখপাত্র বলেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার বিষয়ে লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে না। এই কথাগুলো আমরা বার বার বলছি এবং বলেই যাচ্ছি। নির্বাচনের প্রক্রিয়া আমরা অব্যহত রেখেছি।
কারণ, আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন বা সরকারের কর্মকাণ্ডে এতটুকুও প্রতীয়মান হয়নি যে, এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরোপেক্ষ করার জন্য তাদের উৎসাহ আছে। এখনো গ্রেপ্তার চলছে, মামলা চলছে, হয়রানি চলছে। কিছুক্ষণ আগে আমি কোর্ট থেকে আসলাম। আমাদের সিনিয়র নেতাদের পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে। তারা এখনো জেলে আছে। তারপরও আমরা নির্বাচনের কাজগুলো সমাপ্ত করার চেষ্টা করছি। চারদিন ধরে আমাদের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। ঐকফ্রন্টের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। ২০ দলের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষ হয়েছে। এখন এগুলো চূড়ান্ত করার জন্য সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ঐক্যমতে পৌছবো বলে আশা করছি।
নির্বাচন কমিশন বলছে বিএনপির দাবি অযোক্তিক- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে কোন মন্তব্য করার কোন প্রয়োজন নেই। আপনারা জানেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার স্টেটমেন্ট দিয়েছেন পুলিশের সামনে। বক্তব্য দিয়েছেন তাদের মিটিংয়ে। এটাই যথেষ্ট। দ্বিতীয়ত প্রত্যেকটি দল ও জোট বলছে নিরোপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কমিশন এমন কিছু করেনি যাতে বলতে পারি তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায়। আমরা যে গায়েবী মামলার তালিকা দিলাম সে সম্পর্কে এখনো তারা কিছু করতে পারেনি। অন্যদিকে যেসব কর্মকর্তাকে বদলি বা সরিয়ে দেয়ার কথা বলেছিলাম তাদের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, কাউকে সরানো হবে না। গতকাল আরো মারাত্মক কথা বলেছে। তিনি বলেছেন, পুলিশ আমাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে। তারা আমাদের নির্দেশেই সব করছে। তাহলে যতো গায়েবী মামলা, মিথ্যা মামলা ও যতো হ্যারাসমেন্ট হচ্ছে সবই তাদের নির্দেশে হচ্ছে। এটা হলে তো কোন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রীর মুক্তি চেয়েছি, সেটা দেয়নি। বরং পাল্টা একটার পর একটা মামলা দিচ্ছে। অন্যদিকে আমাদের নির্বাচন করার যোগ্য সিনিয়র নেতাদের কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এরপরও আমরা নির্বাচনের কাজ করার চেষ্টা করছি। মাঠে থাকার চেষ্টা করছি। আমরা শেষ পর্যন্ত এই লড়াই করে যাব। আমরা বিশ্বাস করি, শেষ পর্যন্ত যদি নির্বাচনে থাকতে পারি। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন যদি বড় রকমের বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়, তাহলে বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।