বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব জাহাজ নির্মাণ ও রিসাইক্লিং শিল্পে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দর সংলগ্ন এলাকা এবং চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় সরকার অত্যাধুনিক জাহাজ নির্মাণ ও রিসাইক্লিং শিল্প গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোক্তারা এক্ষেত্রে যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে।
রোববার শিল্পমন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুনের সঙ্গে বৈঠককালে শিল্পমন্ত্রী এ আহবান জানান।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে ইপিজেডের সূচনালগ্নে সরকার ট্রেড ইউনিয়ন চালুর সুযোগ দেয়নি। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কমপ্লায়েন্সের অংশ হিসেবে সরকার ইপিজেডে শ্রমিক কল্যাণ সমিতি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।
এর পাশাপাশি সরকার ইতোমধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে শ্রম আইন প্রণয়ন, পরিদর্শক নিয়োগসহ বিদেশি ক্রেতাদের সকল সুপারিশ বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশের চামড়া, ওষুধ, আইটি, মানব সম্পদসহ বিভিন্ন খাতে ইইউ কারিগরি ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতা করতে পারে বলে তিনি জানান।
রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন বলেন, তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মপরিবেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি তৈরি পোশাক শিল্পের পাশাপাশি বাংলাদেশের অন্যান্য শিল্পখাত বৈচিত্রকরণের পরামর্শ দেন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ, ওষুধ, আইটি ও চামড়াশিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারে বলে অভিমত দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিল্পখাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাত বছর মেয়াদী একটি উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। এর আওতায় শিক্ষা, পুষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তা, শিল্পদক্ষতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন খাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত রেখে ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রে তিনি জিএসপি প্লাস ব্যবস্থার আওতায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে এখন থেকেই উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় তৈরি পোশাক খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি, বাংলাদেশের শিল্পখাতের বৈচিত্রকরণ, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) শ্রমিক ইউনিয়নের অধিকার প্রদান, ইইউর সহায়তায় বাংলাদেশের শিল্পখাতের উন্নয়নসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আলোচনায় স্থান পায়।
বৈঠকে ইইউর রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুনের বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পখাতের উন্নয়নে সরকার গৃহিত সাম্প্রতিক উদ্যোগের প্রশংসা করেন।