ঢাকা: গত বছর আগস্টে ঢাকার মিরপুরেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চট্টগ্রামের পরের টেস্টে হার হয়েছিল সঙ্গী। এরপর বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজে। জয় দূরে থাক সেখানে সম্মান বাঁচানোই মুশকিল হয়ে পড়েছিল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টেও জয়ের স্বাদ অধনরাই ছিল। অবশেষ জয় ধরা দিল সেই ঢাকায় এসেই। ২১৮ রানের জয়ে সিরিজটা বাঁচাতে পেরেছে মাহমুদউল্লাহর দল।
টেস্ট জয় সব সময়ই মধুর। সেটি যে প্রতিপক্ষের সঙ্গেই আসুক না কেন! তবে বাংলাদেশ স্বস্তি খুঁজে নিতে পারে নিজেদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করেই। প্রথম ইনিংসে বাজে শুরুর পর মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিং। বড় ইনিংস, তাইজুল ইসলাম আর মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং। দ্বিতীয় ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর শতক, মোহাম্মদ মিঠুনের প্রথম টেস্ট ফিফটি। এমনকি অভিষিক্ত খালেদ আহমেদের বোলিং থেকেও আগামীর পাথেও খুঁজে নিতে পারে বাংলাদেশ।
জয়ের জন্য ৪৪৩ রানের লক্ষ্য ব্যাটিংয়ে নেমেছিল জিম্বাবুয়ে। কাল চতুর্থ দিন শেষ বিকেলে তাইজুল ইসলাম আর মেহেদী হাসান মিরাজ দুটি উইকেট (অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান চারি) তুলে নিয়ে লাগামটা নিজেদের দিকে টেনে নিয়েছিলেন। পঞ্চম দিনের শুরুতে অবশ্য মোস্তাফিজুর রহমান শন উইলিয়ামসকে বোল্ড করে দলকে আত্মবিশ্বাসটা আরও বাড়িয়ে নেন। এরপর অবশ্য পুরোটা সময়জুড়েই রাজত্ব করেছেন দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম আর মেহেদী মিরাজ। মিরাজের রাজত্বটাই বড়। তাইজুল ফিরিয়েছেন সিকান্দার রাজাকে, কট অ্যান্ড বোল্ড করে, আর মিরাজ একে একে মুর, তিরিপানো, মাভুতা ও জার্ভিসকে। জার্ভিসকে ফেরানোর পরপরই জয় ‘নিশ্চিত’ হয় বাংলাদেশের।
ব্রেন্ডন টেলরের কথা আলাদা করে না বললেই নয়। দ্বিতীয়বারের মতো টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। ইতিহাসের ৬৭তম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই অনন্য কীর্তির অধিকারী তিনি। একাধিকবার জোড়া সেঞ্চুরির হিসেবে তিনি ১৪তম ক্রিকেটার। বাংলাদেশকে একটা বড় ধন্যবাদ তিনি দিতেই পারেন। জোড়া সেঞ্চুরির দুটি কীর্তিই যে তাঁর বাংলাদেশের বিপক্ষে। এর আগে ২০১৩ সালে তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিলেন প্রথমবারের মতো।
টেলর ১০৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ১৬৭ বলের এই ইনিংসে বাউন্ডারি ১০টি। টেলর নিজের ইনিংসটি বড় করেছেন আর মনে মনে হয়তো আফসোস করেছেন একজন যোগ্য সঙ্গীর জন্য। প্রথম ইনিংসে পিটার মুর তাঁকে ভালোই সঙ্গ দিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৯ বল খেললেও ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। টেলর ছাড়া বড় স্কোর কেবল ব্রায়ান চারিরই—৪৩। জিম্বাবুয়ের স্কোরকার্ডের দিকে তাকালে ব্যাটসম্যানদের প্রত্যাশা পূরণের করুণ চিত্রটাই বড় হয়ে ফুটে ওঠে। চারির পর জিম্বাবুয়ের তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর—মাসাকাদজার ২৬।
মিরাজ দুই ইনিংস মিলিয়ে তুলে নিলেন ৮ উইকেট। প্রথম ইনিংসেও ৬১ রানে ৩ উইকেট পেয়েছিলেন এই অফ স্পিনার। মিরাজের কৃতিত্ব উইকেট নেওয়ার স্পটলাইটটা দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুলের কাছ থেকে পুরোপুরি নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেন তিনি। তাইজুলের ২ উইকেট ৯৩ রানে। একটি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।