উপমহাদেশের কার্প জাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতিনিয়ত সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যেও একটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে। আজ বুধবার দুপুরে হালদা নদীর চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকায় মৃত ডলফিনটি ভেসে উঠে।
এ নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে হালদা নদী থেকে ১৯টি মরা ডলফিন উদ্ধার করা হয় বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গত, গত প্রায় দুইমাস ধরে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রুহুল আমীন হালদা নদী রক্ষায় ২৬টি অভিযান পরিচালনা করেন।
মুহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে কয়েক সপ্তাহ আগেই ট্রলারের আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়। কারণ এর শরীরে আঘাতের জখম পাওয়া গেছে। উদ্ধারকৃত ডলফিনটির ওজন ৩৭ কেজি ৬০০ গ্রাম, দৈর্ঘ্য ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ১ ফুট ১০ ইঞ্চি। এটি মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে। ’
হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘হালদা নদীর পাড়ে ব্লক বসানোর মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এজন্য প্রতিদিন পাথর ও বালুবোঝাই জাহাজের মতো বড় যান্ত্রিক নৌযান চলাচল করছে। তাছাড়া বালু তোলার ড্রেজারও চলাচল করে।
হয়তো এসব যান্ত্রিক যানের আঘাতে ডলফিনের মুত্যু হয়েছে। ’ তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ধরনের নৌযান আর কিছুদিন চললে হালদা নদীতে একটি ডলফিনও থাকবে না। আর জানুয়ারি পর্যন্ত চললে এই মৌসুমে আর মা মাছ ডিম ছাড়ার জন্য হালদায় আসবে না। ’
জানা যায়, গত প্রায় দুই মাসে ২৬টি অভিযান পরিচালনা করা হয় হালদা নদীতে। অভিযানে ৫টি ড্রেজার ধ্বংস, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অবৈধভাবে উত্তোলিত ৫৬ হাজার ঘনফুট বালি, ২৫ হাজার ২০০ মিটার জাল, ২৩২টি ব্যাটারি ও ৮৮টি চার্জার জব্দ, দুইটি নৌকা ধ্বংস এবং একজনকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।