বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রীক মানবপাচারকারী চক্রের অপতৎপরতা থেমে নেই। এবারো পাচারের টার্গেট করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের।
রোহিঙ্গাদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পাচারকারী চক্র রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে এখন সক্রিয়। পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও টার্গেট করেছে তারা। পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নেওয়া হচ্ছে বহুল সমালোচিত শাহ পরীর দ্বীপকে।
পাচারকারি চক্রের এমন একটি অপতৎপরতা ঠেকিয়ে দিয়েছে বিজিবি। আটক করেছে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে মালয়েশিয়া যাত্রায় যোগ দেয়া ১৪ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে। সোমবার রাত সাড়ে ১১ টায় শাহ পরীর দ্বীপের গোলারচর দক্ষিণ পাড়া সৈকত থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতদের সবাই উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা। তাদের কাছে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গা শনাক্তকরণের পর দেওয়া কার্ড পাওয়া গেঝে। বিজিবি-২ এর পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
আটককৃত রোহিঙ্গা নাগরিকরা হলো, জামতলী শরণার্থী ক্যাম্পের মৃত নুরুল আলমের ছেলে মো. ইয়াছিন (২২), বালুখালী ক্যাম্পের সালামের ছেলে ইসলাম (২৬), থাইংখালী ক্যাম্পের শফিকের ছেলে খায়রুল আমিন (১৮), মোহাম্মদ আলীর ছেলে রহিমুল্লাহ (১৬), মৃত ইমান হোসেনের ছেলে জাকের আহাম্মেদ (১৯), কুতুপালং ক্যাম্পের মৃত আবুল কাসেমের ছেলে ছাইদুল আমিন (১৯) ও সুলতান (৪৫), মৃত কামালের ছেলে ফরিদুল আলম (১৮), নয়াপাড়া ক্যাম্পের মোঃ আলীর ছেলে মোঃ হোসেন (১৭), থাইংখালী ক্যাম্পের আব্দুর রবের মেয়ে নুর বাহার (১৮), বালুখালী ক্যাম্পের আব্দুল গফুরের মেয়ে বিবি খাদিজা (১৮), কুতুপালং মধুরছড়া ক্যাম্পের মৃত আবুল কাশেমের মেয়ে খোরশিদা (১৬), নুর ছালামের মেয়ে রাফিজা (১৮), এবং থাইংখালী ক্যাম্পের সৈয়দ কালামের মেয়ে আনোয়ারা বেগম (১৮)।
এ দিকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের আটককৃত রোহিঙ্গারা বিজিবি’র কাছে স্বীকার করেছে, কুতুপালং ডি- ব্লকের বাসিন্দা আয়ুব আলী নামে এক রোহিঙ্গার কাছে তারা প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল। সাগরপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে এই টাকা নেয়া হয়। সেই অনুযায়ী ২ নভেম্বর রাত ১১ টায় তাদের টেকনাফ উপজেলার কচুবনিয়া থেকে নৌকায় তোলা হয়। দুই দিন সাগরে চলাচলের পর সেই নৌকা ভেড়ানো হয় শাহ পরীর দ্বীপের গোলারচরে। মালয়েশিয়া পৌঁছেছে এই কথা বলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
আটককৃতদের ৬ নভেম্বর নিজ নিজ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে দিয়েছে বিজিবি।