এত দ্রুত সংলাপে রাজি হওয়ায় বিস্মিত বিরোধী নেতারা!

Slider রাজনীতি


বিবিসি:বাংলাদেশে ড: কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট-এর সাথে সংলাপে বাসার ঘোষণা দেবার এক দিন পরেই সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্প ধারা বাংলাদেশকেও সংলাপে আমন্ত্রণ জানিয়েছে সরকার।

জাতীয় ঐক্য-ফ্রন্ট-এর সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার।

এরপর দিন অর্থাৎ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিকল্প ধারার সাথে আলোচনায় বসবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে সংলাপে বসার আগ্রহ জানিয়ে বিকল্প ধারার তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।

সে চিঠি পাঠানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আওয়ামী লীগের তরফ থেকে পাল্টা আরেকটি আমন্ত্রণ পত্র নিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় যাওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ নেতা ড. হাসান মাহমুদ সে চিঠি নিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় যান। সে চিঠিতে সংবিধান সম্মত সব বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে সংলাপের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়ে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

ড: কামাল হোসেনের যখন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু করেন, সে সময় প্রথম দিকে বিকল্পধারা বাংলাদেশ তাদের সাথে ছিল।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন শর্ত নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় বিকল্প ধারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়নি।
১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ঐক্যফন্ট্রের নেতাদের গণভবনে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শরিক জাতীয় পার্টিও প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

গত সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল এক সংবাদ সম্মেলনে আকস্মিকভাবে জাতীয় ঐক্য-ফ্রন্ট-এর সাথে সংলাপে বসার ঘোষণা দেন।

এর আগের দিন জাতীয় ঐক্য-ফ্রন্ট-এর তরফ থেকে ড: কামাল হোসেন আলোচনার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন।

সে চিঠি দেবার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সরকারের তরফ থেকে সংলাপে বসার ঘোষণা দেয়া হলো।

এত দ্রুত সময়ের মধ্যে সংলাপে বসতে রাজি হওয়ায় সরকারি সিদ্ধান্তে কিছুটা বিস্মিতই হয়েছেন বিরোধী নেতারা।

সংলাপ নিয়ে কী ভাবছেন মওদুদ?

আগামীকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সাথে সংলাপে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। যদিও মঙ্গলবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির পর এ সংলাপের ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর মধ্যেই সংলাপ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

তবে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সংলাপের ফলাফল নিয়ে আগে থেকে সন্দেহ পোষণ করা ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে ধরে নিতে হবে যে সরকারের একটা সদিচ্ছা আছে আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করার জন্য। সেজন্য আগে থেকে যদি আমরা সন্দেহ করা শুরু করি বা অবিশ্বাস করা শুরু করি, তাহলে তো আমরা ফলপ্রসূ কিছু অর্জন করতে পারবো না।’

মি. আহমদ বলেন, সংলাপে তারা খোলা মনে অংশগ্রহণ করবেন এবং সেখানে তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সবচেয়ে বড় দল হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির কয়েকজন নেতা এরই মধ্যে সংলাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

যারা সংশয় প্রকাশ করেছেন সেটা তাদের ব্যক্তিগত মত হতে পারে। এমনটাই মনে করছেন মওদুদ আহমদ।

‘সবার যে একই মত হবে তাতো না। অনেকে মনে করেন, অনেকে বিশ্বাস করতে চাচ্ছেন না। অনেকে মনে করেন সরকার এটাকে ধুম্রজাল সৃষ্টি করার জন্য করেছেন। এ ধরণের মতামত থাকতে পারে’, বলেন মি. আহমদ।

‘এখনই আমি যদি বলে নিই যে তারা এটা মানবেন না, তাহলে তো আর এ সংলাপের কোনো প্রয়োজনই পড়ে না। আমরাই তো সংলাপ আহবান করেছি।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপির প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে খালেদা জিয়ার মুক্তি।

বিএনপি নেতারা এখনো বলছেন যে, খালেদা জিয়াকে ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবেন না।

কিন্তু দুর্নীতির দুটি মামলার দণ্ডিত হওয়ার কারণে নির্বাচনে খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন কি না সেটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

সংলাপের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কোনো সুরাহা হবে? – এ প্রশ্নে মওদুদ আহমদ মনে করেন, সেটি অসম্ভব কোনো বিষয় নয়।

‘সরকার যদি মনে করেন যে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেয়া দরকার, জামিনের যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রেখেছেন.. এখানে অ্যাটর্নি জেনারেল হাইকোর্টে বা সুপ্রিম কোর্টে জামিনের প্রশ্ন আসলে উনি ওটাকে আপত্তি না করলেই তো হয়ে গেল।’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা মনে করেন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্দলীয় সরকার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। কারণ, সংসদের অধিবেশন শেষ হলেও গেলেও ১০তম সংসদ এখনো জীবিত আছে। যে কোনো সময় সংসদের অধিবেশন আহবান করতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে উল্লেখ করেন মওদুদ আহমদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *