ছোটখাটো চুরি করতে তার ভালো লাগে না। লাখ বা কোটির গল্প থাকলেই তবে শিকারে বের হয় সে।
শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে বিমান ভাড়া দিয়েও চুরি করতে যেতে কার্পণ্য করে না। বিমান থেকে নেমে সোজা ওঠেন বিলাসবহুল হোটেলে।
জয়ন্তীলাল ওরফে রমেশ খটমল জায়সওয়াল। রাজস্থানের শেরগড়ের বাসিন্দা সে। ছিঁচকেমি তার স্টেটাসের মধ্যে নাকি পড়ে না। কোটি টাকার মালামালের সন্ধান পেলে তবেই সেখানে হানা দেয় জয়ন্তী। তার আবার একটা অদ্ভুত স্বভাব আছে। চুরি করার পর মন্দিরে তাকে যেতেই হবে। তাই প্রত্যেক শিকারের পর মন্দিরে গিয়ে পূজা দেয় জয়ন্তীলাল।
তার শিকার মূলত বড় বড় ব্যবসায়ী, অভিজাত পরিবার। তাদের ফোন নম্বর জোগাড় করে নিজেকে দাউদ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিয়ে হুমকি দেয়। তাতে কাজ না হলে নিজের কৌশল প্রয়োগ করে সে। কাজ চাওয়ার নামে সে সব বাড়িতে ঢোকে। ঘণ্টা কয়েকের মধ্যে সব সাফ করে বেপাত্তা হয়ে যায়। গত পাঁচ বছর ধরে এমন ভাবেই চুরি করে আসছে সে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে রাজস্থানের খাতোদারায় এক বাড়িতে চুরি করার পর। তদন্তে নেমে পুলিশ জয়ন্তীলালের খোঁজ পায়।
পুলিশ জানিয়েছে, খাতোদারায় ওই বাড়িতে হাউসকিপারের প্রয়োজন ছিল। জয়ন্তীলাল খোঁজ নিয়ে সেই পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে। নিজেকে শঙ্কর বলে পরিচয় দেয়। কমলেশ যাদব নামে এক ব্যক্তিকে হাউস কিপারের কাজে পাঠানোর নাম করে নিজেই কমলেশ সেজে সেখানে কাজে ঢোকে। সকাল সাড়ে ১১টায় কাজে যোগ দেয়, বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যেই প্রায় ৪০ লাখ টাকার মাল হাতিয়ে চম্পট দেয়।
জয়ন্তীলালের চুরির কৌশল শুনে পুলিশও হতবাক। পুলিশ জানতে পারে, লাখ লাখ টাকার জিনিস হাতানোর সুযোগ থাকলেই তবেই সে চুরি করে। না হলে চুরি করে না। আর চুরি করার জন্য যদি বিমান ভাড়া দিয়ে যেতে হয়, তাতেও রাজি জয়ন্তীলাল!
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেল পালানো আসামী জয়ন্তীলাল। কিছুতেই পুলিশ তার নাগাল পাচ্ছিল না। এক বার ধরা পড়লেও পালাতে সক্ষম হয় সে। আপাতত পুলিশ এই কোটিপতি চোরের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।