আমাকে কী করবা? সর্বোচ্চ মেরে ফেলতে পারো, তাই তো? ।’– ড. কামাল

Slider রাজনীতি


ঢাকা: ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের গ্রেপ্তারকে ‘অবাক কাণ্ড’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন । এর নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, জামিনযোগ্য মামলা হলেও তাঁকে কারাগারে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. কামাল।

কামাল হোসেন বলেন, ‘পুরো দেশকে জঙ্গল বানিয়েছে। জংলিরাও এমনটা করে না। কেন এগুলো হচ্ছে? সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে! মাথা খারাপ হলে ডাক্তার দেখাতে হয়, তাদের ডাক্তার দেখাতে হবে।’ মইনুল হোসেন জেলে কেন সে বিষয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে কৈফিয়ত চান কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে। কেন বন্দী করছ, এটা জনগণকে জানাও। তোমার বাবার বন্ধু হিসেবে আমাকেও জানাও।’ গ্রেপ্তার ও হয়রানির বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথাও বলেন জ্যেষ্ঠ এই আইনবিদ। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। সেটা রক্ষা না করলে আমি কোর্টে যাব।’

কামাল হোসেন বলেন, ইদানীং নতুন একটি বিষয় শোনা যাচ্ছে, গায়েবি মামলা। এটা তো বুঝি না। সিলেটে জনসভা করতে গিয়ে দেখেছি, কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ছেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে। বেআইনি কাজের জন্য আইনমন্ত্রীর বিচার হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘দ্রুত তোমার বিচার হবে। ১০ বছর পরে হলেও তোমার বিচার হবে। এসব কথা বলার জন্য আমাকে কী করবা? সর্বোচ্চ মেরে ফেলতে পারো, তাই তো? তোমার বিচার হবেই।’

ড.কামাল হোসেন আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ২০০৬- ২০০৭ সালে শেখ হাসিনা যেসব পূর্বশর্ত দিয়েছিলেন আমাদের সাত দফা তারই প্রতিফলন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে তাঁর (শেখ হাসিনা) এ সংক্রান্ত বক্তব্য সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। ক্ষমতায় না থাকলে এক ধরনের বক্তব্য আর ক্ষমতায় থাকলে অন্য ধরনের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বিচলিত হয়ে পড়েছে। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দুরে রাখার জন্য লাখ লাখ কর্মীকে মামলা দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে। গণমাধ্যম যাতে সরকারের দুর্নীতি ও অপশাসনের বিরুদ্ধে লিখতে না পারে সে জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সম্প্রচার আইন করছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ছয় ঘণ্টার মধ্যে মামলা করে মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে ডিভিশন না দিয়ে সাধারণ কয়েদিদের মতো রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকার একটি জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির ওপর বসে আছে। যেকোনো সময় সরকারের পতন হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস নিতাই রায় চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী,আইনজীবী নেতা সানাউল্লাহ মিয়া, গোলাম মোস্তফা খান, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জালাল হোসেন চৌধুরী, গরীবে নেওয়াজ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফি উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *