যুক্তরাষ্ট্রের একটি জাদুঘরে হিব্রু বাইবেলের আদি পান্ডুলিপির ৫টি খন্ড জাল প্রমাণিত হওয়ায় সেগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে। হিব্রু বাইবেলের পান্ডুলিপির আদি নিদর্শন ধরা হয় ডেড সি স্ক্রলকে।
এতদিন এর জাল খন্ডগুলোই প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছিল ওয়াশিটন ডিসির বাইবেল জাদুঘরে।
শেষপর্যন্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খন্ডগুলো জাল প্রমাণিত হওয়ায় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ সেগুলো সরিয়ে ফেলে। আদি হিব্রু বাইবেলের ১৬টি খন্ড ছিল ওয়াশিংটনের বাইবেল জাদুঘরের কাছে। এর মধ্যে ৫টি খন্ড পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল জার্মানিতে।
জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বলেছে, পরীক্ষার ফলাফলে পান্ডুলিপির আদি রুপের সাথে এগুলোর অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ৫০ কোটি ডলার ব্যয় করে ২০১৭ সালে বাইবেল জাদুঘরটি চালু করেন একজন খৃষ্টান এবং ধনকুবের স্টিভ গ্রিন।
যেভাবে মিলেছিল হিব্রু বাইবেলের পান্ডুলিপির সন্ধান
হিব্রু বাইবেলের প্রথম খন্ডের খোঁজ মিলেছিল ১৯৪৭ সালে। তখন এটি পাওয়া গিয়েছিল ডেড সি’র উত্তর পশ্চিম তীর থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে কামরান নামের পাহাড়ি মরু এলাকার গুহা থেকে। এক বেদুঈন বালক ভেড়া চড়াতে গিয়ে এই পান্ডুলিপিটি পেয়েছিল।
বেদুঈন বালকের পরিবার সেই পান্ডলিপি পুরাকীর্তি ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। পরে সেই পান্ডুলিপি খৃষ্টান ধর্মযাজকের হাতে যায়।
তবে আমেরিকান স্কুল অব রিসোর্চের একজন গবেষক ড: ট্রেভর পান্ডুলিপি দেখে এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন। পরে এগুলোই অনেকে অর্থের লোভে জাল করে সম্পদশালী আমেরিকানদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
ওয়াশিংটনের বাইবেল জাদুঘরে হিব্রু বাইবেলের যে ১৬টি পান্ডুলিপি ছিল, সেগুলোর মধ্যে ১৩টি খন্ড পড়ার পর বাইবেলের পন্ডিতরা এর বেশ কয়েকটি জাল বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। পন্ডিতরা এই খন্ডগুলো পরীক্ষা করে দেখার পরামর্শ দেন। তখন ৫টি খন্ড জার্মানিতে পরীক্ষা করা হয়।
সেই পরীক্ষায় ৫টি পান্ডুলিপি জাল বলে ধরা পড়ে। জাদুঘরটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেফরি ক্লোহা বলেছেন, পরীক্ষার ফলাফল ভিন্ন হবে বলে তিনি আশা করেছিলেন। একইসাথে তিনি বলেছেন, ঘটনাটি তাদের জন্য শিক্ষনীয় হয়ে থাকবে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাইবেলের পান্ডুলিপির সত্যতা যাচাইয়ের ব্যাপারে তারা যে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং স্বচ্ছ্বতার ব্যাপারে তাদের যে প্রতিশ্রুতি আছে, সেটা মানুষ অনুধাবন করবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে বাইবেল জাদুঘরটির মালিক স্টিভ গ্রিন এর আগেও এ ধরণের বিতর্কে জড়িয়েছেন। গত বছরই মিস্টার গ্রিনের কোম্পানি “হবি লবি”র বিরুদ্ধে ইরাক থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন চোরাচালানের অভিযোগ এসেছিল। শেষপর্যন্ত সেই অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ঐ কোম্পানিকে ৩০ লাখ ডলার জরিমানা দিতে হয়।