মঙ্গল গ্রহে বিশাল পাহাড় রহস্যের সমাধান বিজ্ঞানীদের

তথ্যপ্রযুক্তি

mongolনাসার মহাকাশ গবেষণাযান কিউরিওসিটি রোভার মঙ্গল গ্রহের যে অঞ্চলে অবতরণ করেছিল, সেই গেইল জ্বালামুখের মাঝখানেই রয়েছে অনেক উঁচু একটি পাহাড়। মঙ্গল গ্রহের ওই স্থানে এত উঁচু পাহাড় রহস্যের সমাধানের জন্য এতদিন বলা যায়, রাতের ঘুমও বাদ দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।

কিন্তু গেইল জ্বালামুখের একেবারে মাঝখানে মাউন্ট শার্পের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার উঁচু পাহাড়টা কীভাবে তৈরি হলো, তার সদুত্তর কিছুতেই পাচ্ছিলেন না বিজ্ঞানীরা।

সম্প্রতি কিউরিওসিটি রোভারের পাঠানো তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই অবশেষে রহস্যের সমাধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। পাহাড় সৃষ্টির রহস্যের সমাধানের পাশাপাশি মঙ্গল গ্রহে পানির অস্তিত্বের তত্ত্বগত প্রমাণও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

মঙ্গলের ভূপ্রকৃতি নিয়ে একাধিক গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, গেইল জ্বালামুখের ওপর অনেক যুগ আগে একটি বিশাল হ্রদ ছিল। আর সেখানে অন্তত এক কোটি বছর ধরে বাতাসের সঙ্গে বালি ও ধুলোর কণা এসে জমা হয়েছে। ফলে মাউন্ট শার্প আসলে সেই বায়ুতাড়িত ধুলো জমে তৈরি হওয়া পর্বত।

এই তত্ত্ব আপাত ভাবে মেনে নেওয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা মেনে নিয়েছেন আরও একটি তত্ত্ব। সেটি হচ্ছে, সৃষ্টির পর প্রথম দুই কোটি বছর ধরে মঙ্গলের যা পরিবেশ ছিল, তার সঙ্গে বর্তমানের কোনো মিল-ই নেই।

সে সময়ের মঙ্গল গ্রহ বর্তমানের তুলনায় অনেক বেশি উষ্ণ এবং পানিময় ছিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। গেইল জ্বালামুখের যা আয়তন, তাতে সেখানের সম্পূর্ণ পানিটাই বাষ্পে পরিণত হতে অন্তত কয়েক কোটি বছর সময় লেগেছিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের মতে, বহু বছর ধরে ধুলো ও বালির কণা জমে জমে গেইল জ্বালামুখের অনেকটা অংশই অগভীর হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত সেই সময় ওপরের তলের প্রবল চাপে ওই ধুলোর পাহাড়ের নীচের অংশ পাথরে পরিণত হয়।

ফলে মাউন্ট শার্পের উৎপত্তির কারণ নিয়ে আপাতত নিঃসংশয় বিজ্ঞানীরা। তাদের আশা, এই সূত্র ধরে গবেষণা চালিয়ে মঙ্গল গ্রহে পানির অস্তিত্ব নিয়ে আরো বড় কোনো প্রমাণ পাওয়া তাদের কাছে শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *