ফ্রান্সে বোরকার উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল বলে ঘোষণা করেছে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিটি।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ফ্রান্স বোরকার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ব্যর্থ হয়েছে।
ফ্রান্সের দুজন নারীকে ২০১২ সালে শুধু চোখ দেখা যায় এমন নেকাব পরিধান করায় অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করে।
এছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত নাগরিকদের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি আঘাত বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। দেশটির সরকারকে বোরকা নিষিদ্ধের আইনটি পুনরায় বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন তারা।
ওই আইনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সে কেউ প্রকাশ্যে এমন কোনো পোশাক পড়তে পারবেন না, যা তাদের শরীরকে ঢেকে রাখে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি নিকোলাস সারকোজির নেতৃত্বে ২০১০ সালের আইনে জনসাধারণের সমর্থন ছিল। কিন্তু অনেকেই বলেছেন যে এটি ফ্রান্সের সংখ্যালঘু মুসলমান নারীদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে যারা ইসলামী পর্দার বিধান মেনে চলেন।
মানবাধিকার কমিটির স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের প্যানেলটি, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষেদের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো তত্ত্বাবধান করেন। বোরকা নিষিদ্ধের বিষয়ে ফ্রান্স কী পদক্ষেপ নিয়েছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে দেশটির সরকারকে ১৮০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন তারা।
ফ্রান্সে আনুমানিক পাঁচ মিলিয়ন মুসলমান বসবাস করেন। এই আইন অমান্যকারী নারীদের ১৫০ ইউরো বা ১৭০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে।
ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া এবং বেলজিয়ামসহ অন্যান্য ইইউভুক্ত দেশগুলিতে একই রকম মুখ ঢেকে রেখে বোরকা নিষিদ্ধ করেছে।
বোরকা পরে মুখ ঢাকলে জরিমানা ১৫৬০ ডলার!
এবিসি নিউজ অনলাইন; ০১ জুন ২০১৮, ১১:১৩
চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে ডেনমার্কে বোরকা পরে কোনো নারী মুখ ঢেকে জনপরিসরে বের হলে জরিমানা গুণতে হবে। বৃহস্পতিবার দেশটির আইনপ্রণেতারা এই আইন পাস করেন।
আইন অমান্য করে মুখ ঢেকে জনপরিসরে বের হলে একশ ৫৬ ডলার থেকে এক হাজার পাঁচশ ৬০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
অবশ্য আগে থেকেই বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, বুলগেরিয়া এবং সুইজারল্যান্ডেও জনপরিসরে মুখ ঢেকে বের হওয়া নিষেধ। ডেনমার্কে সরকারিভাবে অবশ্য বলা হচ্ছে, কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মতো ধৃষ্টতা তাদের নেই।
এদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, পোশাক পছন্দের ব্যাপারে সকল নারীর অধিকার থাকা উচিত। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তাদের ওপর, যেসব নারী বোরকা পরে মুখ ঢেকে রাখেন। এই আইনের ফলে তাদের অধিকার খর্ব হবে।
তবে দেশটিতে ঠিক কতো সংখ্যক নারী বোরকা পরে মুখ ঢেকে রাখেন তার কোনো পরিসংখ্যান জানা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্যে বোরকা-হিজাব নিষিদ্ধ হচ্ছে!
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়লাভের পর প্রথম মুসলিমবিরোধী তৎপরতার অংশ হিসেবে বোরকা ও হিজাব পরা নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের রিপালিকান দলের নেতারা।
এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার স্টেট হাউসে একটি প্রস্তাব আসে। এ প্রস্তাবে সমর্থন দেন রিপালিকান দলের জেসন স্পেন্সার ও উড বাইডেন। জেসন স্পেন্সার বলেন, শুধু যেসব নারী প্রকাশ্যে রাস্তায় ঘোরাফেরা, বিভিন্ন অফিস আদালতে কর্মজীবী বা অফিস আদলতে যাবেন, প্রকাশ্যে ড্রাইভিং করবেন তাদের বেলায় এ আইন বলবৎ করা যেতে পারে। বর্তমানে পোশাক-পরিচ্ছদের ওপর তেমন কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও বোরকা ও হিজাবে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এ নিয়ে জর্জিয়ায় স্কুল ও কলেজগামী মুসলিম শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।