ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ডিন’স কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ডিন’স কমিটির সভা ছিল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় ৷ প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সভা হলো। সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে ৷ ঘ ইউনিটে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার পরীক্ষার্থী পাস করেছে। ডিনরা তাদের আরেকটা পরীক্ষা নেওয়ার কথা বললেন।
পরীক্ষার সমন্বয়কারী ও যুগ্ম সমন্বয়কারী ডিনরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষার তারিখসহ অন্যান্য তথ্য পরে গণমাধ্যমকে জানাবেন। ১২ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়। এই পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তখনই ওঠে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
ভর্তি পরীক্ষার আগে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের কপি প্রক্টরকেও দেখানো হয়। সেই প্রশ্নে ৭২টি প্রশ্ন দেখানো হয়, যা ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের সাথে হুবহু মিলে যায়। অবশ্য প্রথম থেকে ভর্তি পরীক্ষার সাথে নিয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিল।
প্রতিবেদন দেয়নি তবুও আবারো তদন্তের দায়িত্বে পুরনো কমিটি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ২২ অক্টোবর ২০১৮, ১৯:৩৭
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘ-ইউনিটে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় যারা গত এক বছরেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি তাদেরকে ফের চলতি বছরের ঘ-ইউনিটের প্রশ্নফাঁস তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সোমবার চলতি বছরের ঢাবি ঘ-ইউনিটের প্রশ্নফাঁস নিয়ে এই অধিকতর তদন্তের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির অন্যরা হলেন জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক, সিন্ডিকেট সদস্য বাহালুল মজনুন চুন্নু, জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক অসীম কুমার সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী। তদন্ত কমিটিকে দু’সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে ২০১৭-১৮ সেশনে ঘ-ইউনিটের প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় একই কমিটিকেই তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু গত এক বছরেও তারা প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। এদিকে, যে কমিটি এক বছরে তদন্ত শেষ করতে পারেনি তারা কিভাবে দু’সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন জানতে চাইলে কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. অসীম কুমার সরকার নয়া দিগন্তকে বলেন, ভিসি স্যার আস্থার জায়গা থেকে আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের পরে যথাযথভাবে রিপোটং প্রদান করবো।
প্রশ্ন ওঠা উক্ত তদন্ত কমিটির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জানান, গত বছরের কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদেরকে দুই সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে। দেখা যাক।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১২ অক্টোবর ঘ-ইউনিটের পরীক্ষার পূর্বেই প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটা নিয়ে প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মাদ সামাদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ১৬ অক্টোবর এর ফল প্রকাশ করেন। এতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে অনশন করেন আইন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আখতার হোসেন। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়। যাচাই-বাছাই করে পুনঃপরীক্ষা নেয়ার দাবি জানায় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ। একই দাবিতে ক্যাম্পাসে সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট নেতাকর্মীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, সবগুলো আমাদের বিবেচনায় আছে। বিষয়টি আদালতে আছে। এটা নিয়ে পাবলিকলি কিছু বলতে চাচ্ছি না।