ইমরুলের ব্যাটে ভর করে সম্মানজনক স্কোর করল বাংলাদেশ। ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি আর সাইফউদ্দিনের হাফ-সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭১ রান।
টসে জিতে চেনা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে দলীয় ১৬ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪ রানে ফিরে যান ওপেনার লিটন দাস। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা অভিষিক্ত ফজলে মাহমুদ রাব্বিও হতাশ করেছেন। রানের খাতা খোলার আগেই একই ওভারের শেষ বলে ফিরে গেছেন তিনি। তেন্দাই চাতারার ওই এক ওভারে দুটি উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।
এরপর ক্রিজে আসা মুশফিকুর রহীম ভরসার পাত্র হয়ে ওঠার আগেই ফিরে যান ১৫ রানে। মুশফিক-ইমরুলের ৪৯ রানের জুটিতে বাংলাদেশ যখন লড়াইয়ে ফেরার প্রত্যাশা করছিলো তখনই মাভুতার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুশফিক। এরপর মোহাম্মাদ মিথুন অবশ্য কিছটা সঙ্গ দিয়েছেন ইমরুল কায়েসকে। মোহাম্মাদ মিথুন তিনি ৩৭ রান করেছেন ৪০ বল খেলে। যাওয়ার আগে ইমরুল কায়েসের সাথে ৭১ রানের জুটি গড়েছেন মিথুন। এই জুটিতেই বাংলাদেশের রান এক শ’ পার হয়।
মিথুনের বিদায়ের পর ২ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় দল। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ যথাক্রমে ১ ও শূন্য রানে ফিরে যান। দুজনেই খেলেছেন চারটি করে বল। তবে এরপর ক্রিজে আসা সাইফুদ্দিন ইমরুলের সাথে জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যায় সম্মনজনক স্কোরের দিকে।
ত্রিপানোর করা ৪৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ৪৯তম ওভারে বিদায় নেন ইমরুল। তার আগে ১৪০ বলে ১৩টি চার আর ৬টি ছক্কায় তিনি করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ১৪৪ রান। এটি তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসও। এরপর সাইফউদ্দিন নিজের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন। ইনিংসের শেষ ওভারে বিদায় নেয়ার আগে তার ব্যাট থেকে ৬৯ বলে ৩টি চার আর একটি ছক্কায় আসে ৫০ রান। শেষ পর্যন্ত মাশরাফি ২ ও মুস্তাফিজ ১ রানে অপরজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
জিম্বাবুয়ের বোলারদের মধ্যে জারভিস ৯ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন। আর চাতারা ১০ ওভারে ৫৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। একটি উইকেট পেয়েছেন মাভুটা।
চেনা প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেখানে আসা যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে সেখানে দলকে একাই পথ দেখালেন বামহাতি ওপেনার ইমরুল কায়েস। দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে তিনি ভরসার পাত্র হয়ে উঠেছেন। তুলে নিয়েছেন আরেকটি ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ইমরুল তার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলেছেন আজ। সাজ ঘরে ফিরে যাওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪৪ রান।
১৪০ বল খেলে ১৩টি চার ৬টি ছক্কায় সাজিয়েছেন তার বর্নিল এই ইনিংস। দলীয় ১৮টি চার ও ১০টি ছয়ের মধ্যে ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা একাই হাকিয়েছেন ইমরুল। তার সেঞ্চুরিতে ভর করেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ার পথে রয়েছে বাংলাদেশ।
ওয়ানডে ক্যারিযারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ইমরুল কায়েস। ১১৮ বলে সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌছান এই ওপেনার। ত্রিপানোর করা ৪৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এক রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ৪৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর দাড়িয়েছে ৬ উইকেটে ২০৩ রান।
ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলের মধ্যেও ব্যতিক্রম ওপেনার ইমরুল কায়েস। এক প্রান্ত আগলে রেখে তিনি লড়াই করে গেছেন জিম্বাবুয়ের বোলারদের বিপক্ষে।
বাংলাদেশ স্কোয়াড : লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, ফজলে মাহমুদ, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিথুন, মাহমুদুল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মাশরাফি মর্তুজা (অধিনায়ক), নাজমুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।