টানা দুই সপ্তাহ ধরে বিশ্ব গণমাধ্যমের নজরের কেন্দ্রে আছেন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। তিনি কর্মজীবনে কী করেছিলেন তা নিয়েও আগ্রহের শেষ নেই।
এর প্রেক্ষিতে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য একে একে বেরিয়ে আসছে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ভিসা সংক্রান্ত কাজে তুরস্কে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেট কার্যালয়ে প্রবেশ করলে তাকে হত্যা করে একটি বিশেষ ঘাতক দল। এ হত্যার দায় স্বীকার করেছে সৌদি আরব।
তবে এর চেয়েও বড় খবর হচ্ছে- মার্কিন লেখক লরেন্স রাইটের লেখা ‘দ্য লুমিং টাওয়ার : আল কায়দা অ্যান্ড দ্য রোড টু ৯/১১’ নামের বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে- সাংবাদিকতা জীবনের বাইরে খাসোগির ভিন্ন রূপ।
ওই বইয়ে বলা হয়েছে, আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন খাসোগি।
বইয়ের প্রথম দিকে বলা হয়, লাদেন ও খাসোগি উভয়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য ছিলেন। পরে ব্রাদারহুড মতাদর্শ থেকে হঠাৎই সরে গিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা গঠন করেন লাদেন। বইটির ৭৮ পৃষ্ঠায় বলা হয়, কর্মজীবনে সৌদি আরবের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের হয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের আফগান আক্রমণ ও ওসামা বিন লাদেনের উত্থানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রতিবেদন করেন খাসোগি।
আশি ও নব্বইয়ের দশকে আফগানিস্তানের বিখ্যাত তোরাবোরা পাহাড়ে বেশ কয়েকবার ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন খাসোগি।
১৯৮৮ সালের ৪ মে আফগানিস্তানে আল কায়দার অপারেশনের অভিজ্ঞতা নিয়ে আরব নিউজে ছবিসহ একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন তিনি। ছবিতে তাকে আফগানি পোশাক পরা ও তার ঘাড়ে আরবিজি রকেটলঞ্চার দেখা গেছে।
১৯৫৮ সালের ১৩ অক্টোবর মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন খাসোগি। তার দাদা ছিলেন সৌদি রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আজিজ আল সৌদের ব্যক্তিগত চিকিৎসক। সেই সুবাদে রাজপরিবারে তার বিচরণ। সৌদি রাজপরিবারের বহু গোপন বিষয়ও তিনি জানতেন।
বলা হয়ে থাকে, খাসোগি রাজপরিবারের বাইরে থাকা একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন, যিনি আল কায়দার টুইন টাওয়ার হামলা নিয়ে সৌদি রাজপরিবারের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারগুলো জানতেন।
তবে টুইন টাওয়ার হামলার পর বিন লাদেনের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন বলে জানিয়েছিলেন খাসোগি।