ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেছেন, আমরা তো আওয়ামী লীগকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি না। যখনই মিটিং মিছিলে যাই, তখনই সামনে থাকে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ না। বিএপিকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীকে, আওয়ামী লীগকে না।
আজ শুক্রবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে নজরুল ইসলাম খান এ মন্তব্য করেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত আফসার আলীর ১৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আফসার আলী স্মৃতি ফাউন্ডেশন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকার কণ্ঠরোধ করার জন্য একের পর এক কালাকানুন করছে। যারাই গণতন্ত্রের কথা বলে, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দেওয়া হচ্ছে। গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে এবং গুম, খুন ইত্যাদির মাধ্যমে বিরোধী দলকে দমন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যে সরকারের শাসনামলে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, তার আমলে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, এটা জাতি বিশ্বাস করে না। যাদের কাছে আইনি অস্ত্র আছে, তাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ভোট চুরি করে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েছে।
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সংবিধানে আছে নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করবে সহায়ক সরকার। কিন্তু দলীয় সরকার থাকলে তারা সহায়তা করবে না, প্রভাবিত করবে। বিএনপি সহায়ক সরকার চায়, প্রভাবিত করার সরকার চায় না।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, আগামী ২৯ তারিখ আরেকটি রায় হবে, কী রায় হবে আমরা জানি না। কিন্তু যেভাবে দ্রুত এ রায় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তাতে অনুমান করা যায় সেখানেও সরকারের যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, তারই প্রতিফলন ঘটবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা আমাদের অত্যন্ত ন্যায্য আবেদন এবং উচ্চ আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করে তাঁকে (খালেদা জিয়া) আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেবে। পরে রায় ঘোষণা করা হবে।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন, কামাল হোসেন জিরো। মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে বলতে চাই, বিচারপতি সাত্তারের বিরুদ্ধে আপনার দল ও অন্যান্য বিরোধী দল মিলে কামাল হোসেনের চেয়ে যোগ্য কাউকে খুঁজে পায়নি। তাঁকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করেছিলেন। আর আজকে তিনি জিরো।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী আ স ম আবদুর রব যিনি আগেরবার আপনার সরকার ব্যবস্থায় মন্ত্রী ছিলেন, তিনিও জিরো। আর আপনি সরকারি চাকরি করে, এরশাদের উপদেষ্টা হয়ে আজ মন্ত্রী হয়ে প্লাস হয়ে গেলেন? অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে আপনাদের বারবার পরাজিত করা দল বিএনপিও জিরো হয়ে গেল? আর প্লাস শুধু কি আপনাদের শাসনামলের রাজনৈতিক দলগুলো? সেগুলোকে প্লাস রাখার ব্যবস্থাই তো রাখেননি।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাহানারা সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।