টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। ভিসির কাছে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিচার না পেয়ে ৪৮ জন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার, সহ-সভাপতি ইমরান মিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাবির ইকবাল ও সহ-সভাপতি আদ্রিতা পান্না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শনিবার ২য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফলে ঈশিতা বিশ্বাস নামে এক ছাত্রী ফেল করেন। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী রোববার সকালে কোয়ান্টাম মেকানিক্স-১ পরীক্ষায় তাকে অংশগ্রহণের অনুমোদন দেয়া হয়নি। পরে ছাত্রলীগ নেতারা তাকে জোড় করে পরীক্ষার হলে বসিয়ে দেন।
শিক্ষকেরা এতে বাধা দিতে গেলে ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব তালুকদার পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. আনোয়ার হোসেন ও মহিউদ্দিন তাসনিনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাদের মারতে উদ্যত হন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ঈশিতাকে পাহারা দিয়ে সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ করান। পরীক্ষা শেষে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ডেকে অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করেন। এ সময় কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা বন্ধ করা হয়।
পরে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় রোববার বিকালে জরুরি সভা ডাকে শিক্ষক সমিতি। সভায় ভিসি বরাবর দুইটি আবেদনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের ওই চার নেতার বিচারের দাবি জানানো হয়। সন্ধ্যায় ভিসির কক্ষে ছাত্রলীগ ও শিক্ষকদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতারা বের হয়ে এসে প্রতিটি হল থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের বের করে অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের আন্দোলন শুরু করেন। অন্যদিকে ভিসির কনফারেন্স রুমে তাৎক্ষণিক বিচার না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষকরা একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. তৌহিদুল ইসলামের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব তালুকদার বলেন, ঈশিতা বিশ্বাসকে ইনটেনশনালী ফেল করানো হয়েছে। এছাড়া অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের দাবি শুধু ছাত্রলীগের নয়, সবার। কারণ এটা সকল শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগটিও সঠিক নয়। স্যারদের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জাস্ট কথা কাটাকাটি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব তালুকদার বলেন, ঈশিতা বিশ্বাসকে ইনটেনশনালী ফেল করানো হয়েছে। এছাড়া অর্ডিন্যান্স পরিবর্তনের দাবি শুধু ছাত্রলীগের নয়, সবার। কারণ এটা সকল শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগটিও সঠিক নয়। স্যারদের সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জাস্ট কথা কাটাকাটি হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মুহাম্মদ শাহীন উদ্দিন বলেন, আমরা সঠিক বিচার না পাওয়ায় সোমবার দুপুরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। আমরা এই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’