ঢাকা: বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকারের পাস করা কোনো আইন বিএনপি মানে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পাসের প্রতিক্রিয়ায় তিনি আরো বলেন, এই সরকারের কোনো আইন আমরা মানি না। কারণ তারা অবৈধ সরকার। সংসদে আইন পাস করার কোনো বৈধতা তাদের নেই। তারা একটি প্রতারক সরকার।
আজ সোমবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলের হলরুমে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী বোধ হয় কালো হরিণ চোখ দেখতে পেয়েছেন। অত্যন্ত দুঃখের, হতাশার, ক্ষোভের কথা। আমরা যে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, যে স্বপ্ন দেখেছি, এই সরকার তা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। এই দলটি একটার পর পর কালো আইন চাপিয়ে দিয়েছে।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনাদের এখনো সময় আছে। সময় শেষ হয়নি এখনো। উপলব্ধি করার সময় আছে। যিনি আপনাদের রক্ষাকর্তা, সেই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। একমাত্র তিনি আপনাদের মুক্তি দিতে পারবেন। তাকে মুক্ত করুন, আলোচনা করুন। কিভাবে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে তা নিয়ে আলোচনা করুন।
তিনি বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। জনগণকে জিম্মি করে কিছুদিনের জন্য ক্ষমতায় থাকা যায়। চিরদিনের জন্য নয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি সব সময় বলি, আশা ছেড়ো না। আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে নিতে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাবো। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন সম্পূর্ণভাবে ধূলিসাৎ করে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ায় সাংবাদিকসহ সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দেশে যে কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে, তাকে চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সেই চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধূলিসাৎ করে দেয়া হচ্ছে৷ গণতান্ত্রিক, মুক্ত স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ভেঙে ফেলা হচ্ছে৷ আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি বহু মত, বহু পথ, ভিন্ন মতের ব্যবস্থাকে পুরোপুরি শেষ করে দিয়ে একটি দলের শাসন বাস্তবায়নের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। এভাবে চলতে দেয়া যায় না। দেশের সবাইকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
বিএনপি আয়োজিত সভায় অংশ নেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শ্যামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরীসহ বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও কূটনৈতিকরা।