ঢাকা: বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের জেলে রাখার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)-এর প্যানেল আলোচনায়। এতে উঠে আসে বাংলাদেশে জেলবন্দি সুপরিচিত সাংবাদিক ড. শহিদুল আলমের ইস্যুও। ‘প্রেস বিহাইন্ড বারস’ বা সংবাদ মাধ্যমের অন্তরায়ের নেপথ্যে বিষয়ক আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। ওই আলোচনায় বিশ্বে যেসব দেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়। এক্ষেত্রে যেসব দেশে সংবাদ মাধ্যমের কথা জোর দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে মিয়ানমার, বাংলাদেশ, মিশর ও কিরগিজস্তান।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালে এমন পর্যালোচনা করা হয়। এতে যে তিনজন প্যানেল সদস্য ছিলেন তারা হলেন সিপিজের নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন, মিয়ানমারের সাংবাদিক ওয়া লোন এবং কাইওয়া সোয়ে ও’র আইনজীবি ব্যারিস্টার আমাল ক্লুনি ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সম্পাদক স্টিফেন জে. আদলার। তারা সবাই সারা বিশ্বে মুক্ত সংবাদ মাধ্যমের অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে কথা বলতে আহ্বান জানান দেশগুলোর কর্তৃপক্ষ ও জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি। আলোচনায় জোয়েল সিমন বলেন, আমরা যেসব সাংবাদিককের বিষয়কে প্রাধান্য দিচ্ছি তারা হলেন রিপোর্টার। তারা তাদের সম্প্রদায়ের স্বাধীনতা রক্ষা করতে এবং সারা বিশ্বকে তথ্য জানাতে নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছেন। অন্যদিকে রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন এবং কাইওয়া সোয়ে ও’র বিষয়ে আলোকপাত করেন আদলার ও আমাল ক্লুনি। এ দুজন সাংবাদিক মিয়ানমারের অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে রয়েছেন। এই দু’জন আলোচক বলেন, তাদের কণ্ঠকে সত্যিকার অর্থে স্তব্ধ করতে কর্তৃপক্ষ সব ব্যবস্থা করেছে।
তবে এ মামলা নিয়ে প্রকাশ্যে প্রথম এদিন কথা বলেন আমাল ক্লুনি। তিনি বলেন, প্রায় এক বছর হতে চলেছে সাংবাদিক ওয়া লোন ও কাইওয়া সোয়ে ও’কে তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তাদেরকে লজ্জাজনক বিচারে আদালতের ভিতর দিয়ে হাঁটানো হয়েছে। তাদেরকে অভিযুক্ত করে শাস্তি দেয়া হলো এক হাস্যকর বিচার। এখন তাদেরকে মুক্ত করে দেয়া সরকারের বিষয়।
ওদিকে জোয়েল সিমন বাংলাদেশে জেলে বন্দি থাকা বাংলাদেশের ফটোসাংবাদিক শহিদুল আলম, কাজাখস্তানে জেলবন্দি সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী আজিমজন আসকারভ এবং মিশরে জেলবন্দি ব্লগার আলা আবদেল ফাত্তাহ, ফটোসাংবাদিক মাহমুদ আবু জায়েদের প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের জেল দেয়ার মাধ্যমে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু কাভারেজ করায় সফলতার সঙ্গে সেন্সরিং করা হচ্ছে। আর এর মধ্য দিয়ে জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া ও তার জানানোর জন্য আমাদের যে সমন্বিত অধিকার আছে তা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এটা এমন একটি ইস্যু যা জাতিসংঘ আর এড়িয়ে যেতে পারে না।