দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ শেষে ২০১১ সালে সুদান থেকে পৃথক হয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল দক্ষিণ সুদান। কিন্তু তারপরও গৃহযুদ্ধ তার পিছু ছাড়েনি।
স্বাধীন হওয়ার মাত্র দুই বছরের মাথায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও ভাইস প্রেসিডেন্ট রিক মাচারের মধ্যে বিবাদ দেখা দিলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ওই সময় প্রেসিডেন্ট কির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাচারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ এনেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ব্রিটেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের করা গবেষণা বলছে, দক্ষিণ সুদানের গৃহযুদ্ধে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে তিন লাখ ৮২ হাজার ৯০০। এদের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের শিকার হয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তারা ছাড়াও, সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ায় যারা মারা গেছেন, তারাও আছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের সংখ্যা গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র আটেনি ওয়েক আটেনি বলেছেন, সরকারি তথ্য দেখার পর তিনি গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করবেন।
এদিকে, দক্ষিণ সুদানে নিহতের সংখ্যা ২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় চলে আসা গৃহযুদ্ধে নিহতের সংখ্যার চেয়ে বেশি। কারণ, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে তিন লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ও ‘ইউএস ইন্সটিটিউট অফ পিস’ এর যৌথ উদ্যোগে ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন’ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণাটি পরিচালনা করেছে।
মঙ্গলবার গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
নিহতের সংখ্যা, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার করা ২২৭টি জরিপ বিশ্লেষণ করে গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, তাদের পাওয়া তথ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, দক্ষিণ সুদানে ত্রাণ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং সেখানকার সমস্যা সমাধানে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
অবশ্য সম্প্রতি দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট কির ও বিদ্রোহী নেতা মাচারের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি সই হয়েছে। তবে সেটি কতদিন কার্যকর থাকবে তা বলা মুশকিল। কারণ, এর আগে ২০১৫ সালে সই হওয়া একটি শান্তি চুক্তি ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ভেঙে গিয়েছিল। সূত্র: ডয়চে ভেলে