রাজধানীতে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমেছে। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজারে, প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজের দাম ২৮ টাকা থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২ টাকা থেকে ৩৫ টাকায়। এছাড়া বিদেশি পেঁয়াজের দাম ২৫ টাকা থেকে ২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পুরাতন পেঁয়াজ ৩৭ টাকা থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজারে রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকায়।
মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী নূর হোসেন জানান, পুরাতন পেঁয়াজের চেয়ে বর্তমানে নতুন পেঁয়াজ বেশি বিক্রি হচ্ছে। পুরাতন পেঁয়াজ মানুষ কিনতে চায় না। এছাড়া নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ যথেষ্ট পরিমান থাকার কারণে পেঁয়াজের দাম কমতির দিকে। সরবরাহ আরো বাড়লে পেঁয়াজের দাম আরো কমবে বলে মনে করেন তিনি।
শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মেসার্স শরিয়তপুর এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী মো. আকরাম হোসেন জানান, গত মাসে পেঁয়াজ আমদানি কম থাকায় পেঁয়াজের দাম বেড়ে গিয়েছিল। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে নতুন পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। ফলে পেঁয়াজের দাম কমেছে। তবে সরবরাহ কমে গেলে দাম বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
মেসার্স রহমান ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী আব্দুর রহমান জানান, বাজারে বিদেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি দেশীয় নতুন পেঁয়াজ আসছে তাই দাম অনেকটা কমেছে।
এদিকে বাজারে ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি হালি ব্রয়লার মুরগির লাল ডিমের পাইকারী দম ২৯ টাকা। যা খুচরা বাজারে ৩২ টাকা থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি সাদা ডিমের দাম ৩৫ টাকা থেকে ৩৬ টাকা। যা খুচরা বাজারে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাসের ডিমের দাম প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা থেকে ৩৭ টাকায়।
এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সীমের দাম ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা, পেঁপেঁ ৮ টাকা থেকে ১২ টাকায়, করলা ১৮ টাকা থেকে ২২ টাকায়, শশা ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকায়, জলপাই ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায়, গাজর ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকায়, পটল ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকায়, ফুলকপি প্রতিটি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকায়, বাঁধাকপি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকায়, কুমড়া ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকায়, মুলা ১০ টাকা থেকে ১২ টাকায়, বেগুন ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকায়, ঢেঁড়স ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকায়, বরবটি ২৫ টাকা থেকে ৩০ টকায়, মরিচ ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকায়, লাউ (ছোট) ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকায়, লাউ (বড়) ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকায়, শালগম ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকায়, নতুন আলু ২৫ টাকা থেকে ২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্য পাইকারী বাজার থেকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৫ থেকে ১০ টাকা লাভে বিক্রি করা হচ্ছে।
এছাড়া খুচরা বাজারে সবুজ শাক আটি ৫ টাকা, লাউ শাক ১০ টাকা, লাল শাক ৫ টাকা, মুলা শাক ৪ থেকে ৫ টাকা, পুঁইশাক ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা, ডাটা ১০ টাকা থেকে ১২ টাকা, কলমি শাক ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি সাদা ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা এবং লাল মুরগি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ২৮০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগের সপ্তাহে একই দরে বিক্রি হয়েছিল।
রাজধানীর মালিবাগ, খিলগাঁও, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচাসহ বেশ কয়েকটি বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, শীতকালীন পণ্যের সরবরাহ বাড়তে থাকায় দাম হাতের নাগালে রয়েছে। তবে এসব পণ্যের দাম পাইকারী বাজারে অনেক কম রয়েছে বলেও জানিয়েছেন অনেকে।
যাত্রাবাড়ী পাইকারি কাচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা নূরু হাজি বলেন, ‘আমাদের বাজারে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাচা পণ্য আড়তে আসছে। প্রতিদিন গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত আমাদের আড়তে কাচা পণ্যের বাজার জমজমাট থাকে। এসব পণ্যের সরবরাহ বেশি থাকায় দাম এখনো ক্রেতাদের হাতের নাগালে রয়েছে। সরবরাহ যতদিন বেশি থাকবে ততদিন পণ্যের দাম কমতির দিকে থাকবে।