ঢাকা: দুর্নীতিবাজ মানুষদের অবশ্যই শাস্তি হতে হবে। তাই বলে সমস্যাটি এমন পর্যায়ে যায় নি যে, তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিতে হবে। লন্ডনে দেয়া এক বক্তব্যে এ কথা বলেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি সোমবার লন্ডনে অক্সফোর্ড সেন্টার ফর ইসলামিক স্টাডিজে বক্তব্য রাখছিলেন।
এ সময় মাহাথির বলেন, দুর্নীতিবাজদের জেল হতে পারে। কতদিনের জেল হবে তা নির্ভর করে দুর্নীতির ধরনের ওপর। আমি মনে করি এক এক রকম দুর্নীতির এক এক রকম লেভেলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সাজা হওয়া উচিত। তাই বলে আমরা এমন কোনো পর্যায়ে যাই নি যেখানে লোকজনকে যাবজ্জীবন সাজা দিতে হবে।
মাহাথির মোহাম্মদের এই বক্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে তার দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতির বিচার হচ্ছে তখন এমন বক্তব্যকে অনেকটা ইঙ্গিতপূর্ণ হিসেবে ধরে নেয়া যায়। মাহাথির মোহাম্মদ সম্প্রতি ‘দ্য চ্যালেঞ্জ অব গুড গভর্নেন্স ইন দ্য মুসলিম ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এক লেকচার দিয়েছেন। তার প্রেক্ষিতে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কি দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ড সমর্থন করেন কিনা। এর উত্তরে তিনি ওই কথা বলেন। মাহাথির বলেন, যেসব মানুষকে মালয়েশিয়ার আদালত দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করবে তাদেরকে জেলে পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে তিনি কিছু দেশের কথা তুলে ধরেন। বলেন, ওইসব দেশে দুর্নীতিবাজ মানুষকে প্রকৃতপক্ষে গুলি করে মেরে ফেলে। তবে এতে সমস্যার সমাধান হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। মাহাথির তার লেকচারে বলেন, মুসলিম দেশগুলো গণতান্ত্রিক কাঠামো অনুসরণ করছে। এসব দেশকে আরো সময় ব্যয় করতে হবে কিভাবে গণতন্ত্র কাজ করে তা বুঝতে। তিনি আরো বলেন, যদি আপনি বুঝতে না পারেন একটি গণতন্ত্রে ভোটই হলো শক্তিশালী তাহলে আপনার দেশ গণতান্ত্রিক হবে না। তবে কিছু মুসলিম দেশ রাজতন্ত্রের অধীনে বেশ স্বস্তিকর অবস্থায় আছে। তিনি বলেন, কিছু মুসলিম দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পালাবদন ভয়াবহ। প্রতিবারই যখনই গণতান্ত্রিক পালাবদলের চেষ্টা হয়, তখনই সেখানে নিজেদের মধ্যে লড়াই হয়। এতে ওইসব দেশ প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণই সরকার বাছাই করে এবং সেই সরকার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। কিছু মুসলিম দেশে জনগণ ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে না। তারা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর পরই পরিবর্তন চাওয়া শুরু করে।
মাহাথির বলেন, মালয়েশিয়ায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর। কারণ, জনগণ রাজকীয় শাকদের প্রতি অনুগত। আবার একই সঙ্গে তারা গণতন্ত্র চায়। আমরা মালয়েশিয়ায় সহিংসতা পছন্দ করি না। আমরা কোনো সরকারকে উৎখাত করি নি। সরকার পরিবর্তন হয় নিয়মের মাধ্যমে।