ঢাকা: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় রাওয়ালপিণ্ডির আদিয়ালা কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেয়া হয়। মরিয়মের স্বামী মোহাম্মদ সাফদারকেও মুক্তি দেয়া হয়েছে। এর আগে তাদের সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
গতকাল হাইকোর্টে তাদের আপিলের শুনানি শেষে এ নির্দেশ দেন বিচারপতি আতাহার মিনাল্লাহ ও মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। আপিলের বিষয়ে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত এনএবি’র রায়ের ওপর এ স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে। তবে জামিনের জন্য তাদের সবাইকে ৫ লাখ রুপি মুচলেকা (সিকিউরিটি বন্ড) দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
অনলাইন ডনের খবরে বলা হয়েছে, অ্যাভেনফিল্ড মামলায় গত ৬ই জুলাই ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) একটি আদালত নওয়াজ শরীফ ও তার মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরে লন্ডন থেকে ফেরার পর বিমান বন্দর থেকেই নওয়াজ শরীফ ও তার মেয়েকে গ্রেপ্তার করে এনএবি কর্মকর্তারা। তাদেরকে সরাসরি জেলে পাঠানো হয়। তবে নওয়াজ শরীফ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এনএবি’র রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করার ঘোষণা দেন। বুধবার ওই আপিলের শুনানি শুরু হয়। এতে হাইকোর্টের বিচারিক বেঞ্চ নওয়াজ শরীফের আপিল আবেদন গ্রহণ করে তাদের বিরুদ্ধে এনএবি’র দেয়া সাজা স্থগিত করেন। বিচারক মিনাল্লাহ বলেন, নওয়াজ শরীফ, মরিয়ম নওয়াজ ও মোহাম্মদ সাফদারের পিটিশন গ্রহণ করা হয়েছে। পিটিশনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত তাদের সাজা স্থগিত থাকবে।
হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে, নওয়াজের আপিলের শুনানি নতুন করে শুরু হবে। দ্রুতই এর দিন ধার্য করা হবে। গতকাল আপিলের শুনানি উপলক্ষে আদালতে উপস্থিত হন নওয়াজের দল পিএমএল-এন-এর বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। এনএবি’র রায় স্থগিত করে নওয়াজ শরীফের জামিনের নির্দেশ দেয়ায় তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। নওয়াজের ছোট ভাই শাহবাজ শরীফ হাইকোর্টের নির্দেশ শুনে ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্টে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত শেয়ার করেন। যেখানে বলা হয়েছে, সত্য সমাগত, মিথ্যা বিতাড়িত।
প্রসঙ্গত, গত ৬ই জুলাই এভেনফিল্ড দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করে এনএবি। এতে বরখাস্ত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে অবৈধ সম্পদের মালিকানার দায়ে ১০ বছরের কারাদ- দেয়া হয়। আর এনএবি’র বিচারিক কার্যক্রমে অসহযোগিতা করার জন্য তাকে এক বছরের জেল দেয়া হয়। একই সঙ্গে পিতার অপকর্মে সহায়তা করার দায়ে নওয়াজের মেয়ে মরিয়মকে ৭ বছরের কারাদ- দেয় এনএবি। গত জুলাই মাসে লন্ডন থেকে পাকিস্তানে ফেরার পর লাহোরের বিমানবন্দর থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করে সরাসরি জেলে পাঠায় এনএবি।