বরিশালের বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীতে ফেলে প্রথম স্ত্রী আকলিমা বেগমকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী মনোয়ার হাসেন হাওলাদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আজ বিকেলে বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মহসিন-উল হক আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানা যায়, ২০ বছর আগে পিরোজপুরের নেছারাবাদের মৃত আবু বক্কর হাওলাদারের মেয়ে আকলিমার সাথে পারিবারিকভাবে মনোয়ারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। ২০১২ সালের শেষের দিকে মনোয়ার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ব্যতিরেকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। বিয়ে করার পর মনোয়ার তার প্রথম স্ত্রী আকলিমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে অনুষ্ঠিত সালিশ বৈঠকের রায় অনুযায়ী আকলিমাকে ঘরে তুলে নেয় মনোয়ার। এতে ক্ষুব্ধ দ্বিতীয় স্ত্রী নাছিমা বেগম সংসার ছেড়ে তার বাবার বাড়ি চলে যায়। এর জের ধরে ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারী মনোয়ার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আকলিমাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য সন্ধ্যা নদী পাড়ি দিয়ে কাজলা বাজারে নিয়ে যায়।
সেখানে কালক্ষেপণ করে রাতে আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে সন্ধ্যা নদী পাড়ি দেওয়ার সময় মনোয়ার তার স্ত্রী আকলিমাকে ঠেলে নদীতে ফেলে দেয়।
এরপর আকলিমার মৃত্যু নিশ্চিত বুঝে ডাক-চিৎকার করে মনোয়ার। জেলেরা এসে নদী থেকে মনোয়ারকে জীবিত এবং আকলিমাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় পরদিন ১৭ জানুয়ারি আকলিমার ভাই আব্দুল ছালেক হাওলাদার বাদী হয়ে একমাত্র মনোয়ারকে আসামি করে বানারীপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৩১ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা বানারীপাড়ার লবনাসাড়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মোশারেফ হোসেন একমাত্র মনোয়ারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে ট্রাইব্যুনালে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক ওই রায় ঘোষণা করেন।