বিএনপিকেও অধিকতর কৌশলী এবং বাস্তববাদী হতে হবে জানিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে এগুলে কোনো ফলাফল আসবে না। বিএনপি একটি শক্তিশালী দল।
বিএনপিকে পুনর্গঠন করে এদেশে যেকোনো কাজ করা সম্ভব। সেই বিশ্বাস নিয়ে নেতাদেরকে মাঠে নামতে হবে।
শনিবার দুপুরে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীর এলডিপিতে যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। সকলের মনে একটি প্রশ্ন নির্বানকে ঘিরে দেশে কি হতে যাচ্ছে। দেশের কি শান্তি ফিরে আসবে? মানুষ কি শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারবে? উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড কি অব্যাহত থাকবে? সুশাসন ও ন্যায় বিচার কি প্রতিষ্ঠিত হবে? জনগণ কি ভোট দিতে পারবে? আমি মনে করি সরকারি দল ও বিরোধীদলসমূহকে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে জনগণকে আশার আলো দেখাতে পারে।
তিনি বলেন, জনভিত্তিহীন-আসন বঞ্চিত নেতা, রাজনৈতিক দালাল ও বিতর্কিত সুশীলদের তৎপরতা বাড়ছে। এর থেকে উত্তরণে প্রয়োজন সকলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। দেশকে বিশৃঙ্খলার হাত থেকে বাঁচাতে প্রয়োজন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন।
মানুষের মধ্যে শান্তি ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের বিকল্প নেই।
কর্নেল অলি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যার জন্য সমস্যাগুলো মোটেই কঠিন নয়। প্রয়োজন তাকে আরও নমনীয় হতে হবে। সমাধান দিতে হবে। সবকিছুর উর্দ্ধে উঠতে হবে। জাতীকে মু্ক্ত করতে হবে। জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় যা হওয়ার তাই হবে। রক্তপাত এড়ানো সম্ভব নাও হতে পারে।
কর্নেল অলি বলেন, আমরা সকলে আত্মকেন্দ্রীক, ফায়দার রাজনীতিতে অভ্যস্ত। ক্ষমতার লোভ এবং মোহে আমাদেরকে গ্রাস করেছে। ভাগাভাগি নিয়ে ব্যস্ত। জনগণের কল্যাণে কোনো আগ্রহ নেই। কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নই। নির্বাচনকে সামনে রেখে রণসাজে আমরা সজ্জিত হচ্ছি। মনে হয় দেশ পুনরায় রক্তপাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সুষ্ঠু অবাধ, নিরপেক্ষ অসুভ প্রভাবমুক্ত সকলের অংশগ্রহণে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে উল্লেখ করে কর্নেল অলি বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল তাদেরকে অবহেলা করা ঠিক হবে না। জাতীয়তাবাদী শক্তির উত্থান ঠেকানো সম্ভব হবে না। সরকারকে আরও নমনীয় হতে হবে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব।
নির্বাচন কমিশনে ১০ পার্সেন্ট কমিশন খাওয়ার জন্য কিছু লোক বসে আছে উল্লেখ করে এই প্রবীণ রাজনীতিক বলেন, সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম কিনলে তারা সাড়ে চারশো কোটি টাকা চুরি করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, এই টাকা নদীর জলে ভাসাবেন না। এটাকা দেশের উন্নয়নে ব্যয় করেন।
কর্নেল অলি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আমার বক্তব্যে যদি কোনো সম্মান থাকে দেশের শান্তির জন্য সেটা গ্রহণ করবেন। আর বিএনপিকেও বলবো বাস্তববাদী হোন, কৌশলী হোন। যাদের কোনো নির্বাচনে আসন নাই, যাদের কোনো সাপোর্টার নাই এ ধরণের লোকদের ঐক্যবদ্ধ করে কোনো লাভ হবে না। নিজেদেরকে সংগঠিত করেন। সঠিক নেতৃত্ব পেলে বিএনপির পক্ষে যেকোনো কিছু করা সম্ভব। জ্বালাও পোড়াও দিয়ে দেশের মঙ্গল হবে না।
এ সময় এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল করিম আব্বাসি, প্রফেসর আব্দুল্লাহ, আব্দুল গণি, ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দীন মোস্তফা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম উপস্থিত ছিলেন।